৩০ বছর আগে বিখ্যাত পরিচালক সেলভা ‘অমরাবতী’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষিক্ত হয়েছিলেন তামিল সিনেমার সুপারস্টার অজিত কুমার। তখন সেলভা হয়ত একবারের জন্যও ভাবেননি যে সিনেমার প্রেক্ষাপট নেই এমন একজন তরুণই একসময় হয়ে উঠবেন দক্ষিনের সিনেমার শীর্ষস্থানীয় তারকাদের মধ্যে একজন। সুপারস্টার অজিত কুমার তার দুর্দান্ত চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের তিন দশক পূর্ণ করার পরও অভিনয় করে যাচ্ছেন সমান তালে। উপহার দিচ্ছেন একের পর এক ব্যবসা সফল সিনেমা।
অজিত কুমার অভিনীত ‘ভালিমাই’ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে চলতি বছরের শুরুতে। প্যান ইন্ডিয়া মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমাটিতে অজিত কুমারকে দেখা গেছে অ্যাকশন তারকা রুপে। এইচ বিনোথ পরিচালিত সিনেয়ামতি প্রযোজনা করেছেন বনি কাপুর। ত্রিশ বছর পরও একজন পুরো দস্তুর অ্যাকশন তারকা হিসেবে হাজির হয়েছেন এই তারকা। তবে অজিত কুমারের ক্যারিয়ারটি মোটেও সহজ ছিলো না। অজিত কুমারের তিন দশকের ক্যারিয়ারের যত উত্থান এবং পতনের চিত্র নিয়েই আলোচনা থাকছে এই প্রতিবেদনে।
০১। কাধল কোট্টাই
‘আসাই’ সিনেমার সাফল্যের মাধ্যমে সবার নজর কাড়ার পর অজিত কুমার তার জায়গা ধরে রাখতে ব্যর্থ হন এবং কিছু গড়পড়তা সিনেমায় অভিনয় করেন। কিন্তু এই প্রতিভাবান অভিনেতা রোমান্টিক ড্রামাধর্মী সিনেমা ‘কাধল কোট্টাই’ দিয়ে তার সক্ষমতা প্রমাণ করেছিলেন। বক্স অফিসে সাফল্যের পাশাপাশি সিনেমাটি তিনটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছিলো। এরপর আগাথিয়ান পরিচালিত এই সিনেমাটি আরো কয়েকটি ভাষায় পুনঃনির্মাণ করা হয়েছিল, কিন্তু মূল সংস্করণটিই থেকে গেছে সর্বোত্তম।
০২। ভ্যালি
১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত অজিত কুমার তার সিনেমাগুলোর মাধ্যমে ভাল প্রভাব ফেলেছে, কিন্তু তিনি একটি ব্লকবাস্টার হিট দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে এসজে সূর্য পরিচালিত প্রথম সিনেমা ‘ভ্যালি’ এই অভিনেতাকে শীর্ষে নিয়ে গিয়েছিল। সিনেমাটিতে খলনায়ক এবং নায়কের দ্বৈত ভূমিকায় তার অভিনয় ভক্তদের স্তম্ভিত করেছিল। অজিতের বহুমুখী প্রতিভা সিনেমাটির মাধ্যমে ভালভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং ‘ ভ্যালি’-এর সাফল্য অভিনেতাকে ইন্ডাস্ট্রিতে একটি উচ্চতর স্থান তৈরি করতে সাহায্য করেছে।
০৩। বিল্লা
যদিও ‘বিল্লা’ সিনেমায় অজিত তার ভূমিকায় ভক্তদের মুগ্ধ করে করছিলেন ২০০৭ সালের অ্যাকশন ড্রামা ‘বিল্লা’ মুক্তির আগ পর্যন্ত তিনি বক্স অফিস ব্লকবাস্টার দেওয়ার জন্য লড়াই করছিলেন। ‘বিল্লা’ সিনেমাটির গল্প একই শিরোনামের রজনীকান্তের ১৯৮৬ সালের চলচ্চিত্রের আধুনিক সংস্করণ ছিলো। সিনেমাটিতে অজিত একটি চমৎকার এবং বিশাল ভূমিকা প্রদান করেছিলেন। এছাড়া শক্তিশালী তারকাদের মিলন সিনেমাটিকে বক্স অফিসে অত্যন্ত লাভজনক করে তোলেছিলো।
০৪। মানকথা
ভেঙ্কট প্রভুর পরিচালনায় অজিত কুমার তার ৫০তম সিনেমা ‘মনকথা’-তে হাজির হয়েছিলেন নেতিবাচক চরিত্রে। তারকাবহুল এই থ্রিলারধর্মী সিনেমাটি তামিল চলচ্চিত্রের সর্বকালের অন্যতম সেরা বিনোদনমূলক সিনেমাগুলোর মধ্যে একটি। এই সিনেমার মাধ্যমে অজিত তার কেরিয়ারের ল্যান্ডমার্ক চলচ্চিত্রে নেতিবাচক অভিনয় দিয়ে ভক্তদের স্তব্ধ করে দিয়েছেন। তবে তার অনন্য প্রচেষ্টা ‘মনকথা’ ভক্তদের কাছে আরও স্মরণীয় করে তুলেছে এবং এটি অবশ্যই সবার কাছে অজিতের একটি প্রিয় সিনেমা হিসেবে থাকবে।
০৫। বিশ্বসম
অজিতের ক্রমাগত অনুপস্থিতি তাকে সমস্যায় ফেলেছিল এবং তার চলচ্চিত্র নির্বাচন একটি বিতর্কে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু ‘বিশ্বসম’-এর দুর্দান্ত সাফল্যের সাথে অজিত প্রমাণ করেছেন যে তার সিদ্ধান্ত সবসময় ভুল হবে না। সিরুথাই শিবের পরিচালনায় সিনেমাটিতে অজিত একজন গ্যাংস্টারের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, যে তার পরিবারের জন্য সবচেয়ে বেশি যত্নশীল। টুইস্ট এবং টার্ন সহ সিনেমাটি তামিলের অন্যতম বড় হিট হিসেবে আবির্ভুত হয়েছিলো এবং বেশ কয়েকটি বক্স অফিস রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিলো।
প্রিয় পাঠক, তামিল সিনেমার সুপারস্টার অজিত কুমারের তিন দশকে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমাগুলোর মধ্যে কোন সিনেমাটি আপনার বেশী পছন্দের সেটা জানিয়ে দিন মন্তব্যে। এছাড়া উপরে উল্লেখিত সিনেমাগুলো ছাড়া আর কোন সিনেমা এই তালিকায় থাকা উচিৎ বলে আপনি মনে করছেন সেটাও জানিয়ে দিতে পারেন মন্তব্যে।
আরো পড়ুনঃ
চল্লিশ বছরের বেশী সময় পর এক সাথে রজনীকান্ত এবং কমল হাসান!
জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী সুপারস্টার সুরিয়া অভিনীত পাঁচটি ব্যতিক্রমী সিনেমা
খলনায়ক চরিত্রে তামিল সুপারস্টার বিজয় সেতুপতি অভিনীত যত সিনেমা