সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা এবং প্রগতিশীল গল্পের ১০টি বলিউড সিনেমা

১০টি বলিউড সিনেমা

১০টি বলিউড সিনেমা

সাম্প্রতিক সময়ে বলিউডে বিষয়বস্তু নির্ভর সিনেমার প্রতি নির্মাতাদের আগ্রহ বাড়ছে। এছাড়া বিষয়বস্তু নির্ভর সিনেমাগুলো বক্স অফিসেও সফলতা পাচ্ছে। গতানুগতিক গল্পের বাইরে ভিন্নধারার গল্প নিয়ে নির্মিত সিনেমাগুলোর দর্শকপ্রিয়তাও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে। কিন্তু বিষয়বস্তু নির্ভর সিনেমা বলিউডে আগেও অনেক হয়েছে। এই সিনেমাগুলো বক্স অফিসে আহামরি ব্যবসা না করলেও সে সময়ে আলোচিত হয়েছিলো ব্যপকভাবে। এরমধ্যে এমন কিছু সিনেমা রয়েছে যা সময়ের তুলনায় প্রগতিশীল গল্পে নির্মিত হয়েছিলো। সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা এবং প্রগতিশীল গল্পের এমন ১০টি বলিউড সিনেমা নিয়ে বিস্তারিত থাকছে এই প্রতিবেদনে।

১০টি বলিউড সিনেমা

১। জুদাই
১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জুদাই’ সিনেমাটি শ্রীদেবীর অসাধারণ অভিনয়ের জন্য আলোচিত ছিলো। সিনেমাটির প্রধান কয়েকটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন শ্রীদেবী, অনিল কাপুর এবং উর্মিলা। টাকার লোভে নিজের স্বামীকে ২কোটি রুপির বিনিময়ে দ্বিতীয় বিয়ের জন্য বাধ্য করা এক লোভী স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেন শ্রীদেবী। কিন্তু পরবর্তিতে শ্রীদেবী বুঝতে পারেন যে জীবনে টাকাই সব না। বলিউডের এরকম স্বাধীন সম্পর্ক প্রথম দেখা গেছে ‘জুদাই’ সিনেমায়। শ্রীদেবী, অনিল কাপুর এবং উর্মিলা একই ছাদের নীচে নিজেদের মত করে বসবাস করতে থাকে। কিন্তু শ্রীদেবী নিজের স্বামীর প্রতি তার সতীনের অধিকারের বিষয়টি নিয়ে মানসিক জটিলতায় ভূগতে শুরু করলে বদলে যায় ‘জুদাই’ সিনেমার প্রেক্ষাপট। প্রগতিশীল গল্পের বলিউড সিনেমাগুলোর মধ্যে অন্যতম আলোচিত সিনেমা ‘জুদাই’।

১০টি বলিউড সিনেমা

২। কাভি আলবিদা না কেহনা
২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত করন জোহর পরিচালিত তারকবহুল এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান, রানী মুখার্জি, প্রীতি জিনতা, অভিষেক বচ্চন এবং কিরন রাও। বলিউডের অন্যতম প্রগতিশীল গল্পের সিনেমা হচ্ছে ‘কাভি আলবিদা না কেহনা’। বৈবাহিক সম্পর্কের এক ভিন্ন দৃষ্টিকোণ উঠে এসেছে সিনেমাটিতে। বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্কের মত স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে নির্মিত সিনেমাটি মুক্তির পর ব্যপক সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিলো। শাহরুখ খান এবং রানী মুখার্জির মধ্যকার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক দেখা গেছে সিনেমাটিতে।

১০টি বলিউড সিনেমা

৩। নিঃশব্দ
অসম প্রেমের গল্পের এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন অমিতাভ বচ্চন এবং জিয়া খান। নিজের মেয়ের বয়সী এক মেয়ের প্রেমে পরেন অমিতাভ বচ্চন। মানুষের প্রেমের স্বাভাবিক ধারা ভেঙে সিনেমাটিতে এক বৃদ্ধ এবং তরুণীর প্রেম কাহিনী উঠে এসেছে ‘নিঃশব্দ’ সিনেমাটিতে। সিনেমাটিতে দেখানো হয়েছে যে, এমন একজন মানুষের প্রেমে পড়া খুবই স্বাভাবিক যে তার বাবা হওয়ার জন্য যথেষ্ট বয়সী! প্রগতিশীল গল্পে এটি এমন একটি সিনেমা যা প্রেম সম্পর্কে আমাদের স্বাভাবিকতাকে অস্বীকার করে।

১০টি বলিউড সিনেমা

৪। চিনি কম
‘চিনি কম’ সিনেমাটিতে অমিতাভ বচ্চন বুদ্ধদেব নামে ৬৪ বছর বয়সী একজন সেফের চরিত্রে অভিনয় করেছেন যে তার ৮৫ বয়সী মার সাথে বসবাস করে। ঘটনাক্রমে বুদ্ধদেব ৩৪ বছর বয়সী নিনা ভার্মা (টাবু) এর প্রেমে পরে। ‘নিঃশব্দ’ এরপর অমিতাভ বচ্চনের আরো একটি অসম প্রেমের সিনেমায় বয়সের ব্যবধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।

১০টি বলিউড সিনেমা

৫। নো স্মোকিং
অসাধারণ মনস্তাত্ত্বিক গল্পের সিনেমা ‘নো স্মোকিং’ দেখেছেন কিন্তু পছন্দ হয়নি এমন দর্শক খুব কমই আছেন। জন আব্রাহাম এবং অনুরাগ কাশ্যাপ অভিনীত সিনেমাটি অবিশ্বাস্য এবং বিমূর্ততার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। গতানুগতিক কোন গল্প বা প্রেক্ষাপট নয় বরং প্রগতিশীল গল্পের এই সিনেমাটি মানুষের চিন্তার ধারাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। লোভ- লালসা এবং আপনি আপনার লালসা অনুসরণ করতে কতদূর যেতে পারেন? এই প্রশ্নের উত্তরই দেয়ার চেষ্টা করেছেন সিনেমাটির নির্মাতারা।

১০টি বলিউড সিনেমা

৬। হে রাম
তামিল সিনেমার কিংবদন্তী অভিনেতা কমল হাসানের বিতর্কিত রাজনৈতিক সিনেমা ‘হে রাম’ সে সময়ের চেয়ে বর্তমানকেই বেশী প্রতিনিধিত্ব করে। দাঙ্গা, সহিংসতা এবং বিদ্বেষমূলক বক্তব্যে ভরপুর সিনেমাটিতে কমল হাসানের সাথে অভিনয় করেছেন শাহরুখ খান। সিনেমাটিতে দেখানো সাম্প্রদায়িক সহিংসতার যে বিষয়গুলো দেখানো হয়েছে তা বর্তমানে আমরা আমাদের চারিদিকে দেখছি।

৭। মাই ব্রাদার নিখিল
নিখিল, নাইজেল এবং বোন অনুর সম্পর্কের গল্প নিয়ে নির্মিত সিনেমা ‘মাই ব্রাদার নিখিল’। সমকামীদের নিয়ে নির্মিত এই সিনেমাটিকে বলিউডের অন্যতম প্রগতিশীল সিনেমা হিসেবে বিবেচিত। এক কথায় ‘মাই ব্রাদার নিখিল’ সিনেমাটিকে সংবেদনশীল, শক্তিশালী, আবেগপ্রবণ এবং জীবন পরিবর্তনকারী হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায়।

৮। লাভ সেক্স অর ধোঁকা
তিনটি গল্পের সমন্বয়ে নির্মিত সিনেমাটি ডিজিটাল মিডিয়ার কঠোর বাস্তবতা তুলে ধরেছে। এই বিষয়টি এখন আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং সিরিজে দেখে থাকি। পরস্পর সংযুক্ত তিনটি গল্পে দেখা গেছে ওনার কিলিং, এমএমএস স্ক্যান্ডাল এবং প্রযুক্তির ব্যবহারে স্টিং অপারেশন। দিবাকর ব্যানার্জী পরিচালিত সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন অংশুমান ঝা, নুশরাত ভারুচা, রাজকুমার রাও, নেহা চৌহান, অমিত শিয়াল, হেরি টাংরি এবং আশীষ শর্মা।

৯। কুইন
বলিউডের নারী কেন্দ্রিক সিনেমাগুলোর মধ্যে অন্যতম কঙ্গনা রানাউত অভিনীত ‘কুইন’। সিনেমাটিতে কঙ্গনা রানাউতকে একাই হানিমুনে ভ্রমণকে যেতে দেখা গেছে। কঙ্গনা রানাউত অভিনীত রানী চরিত্রটি একজন অজ্ঞ, দিল্লির মেয়ে যিনি নিজেকে ‘হানিমুনে’ আবিষ্কার করেন। একজন সাদাসিধা মেয়ের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকাটা স্বাভাবিক হিসেবে উপস্থাপনের বিষয়টি সময়ের তুলনায় আগেই নির্মিত হয়েছিলো।

১০। কেয়া কেহনা
কলেজে পড়াকালীন অবস্থায় এক ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক থেকে গর্ভবতী হওয়া মেয়ের গল্প নিয়ে নির্মিত এই সিনেমা। গর্ভবতী হওয়ার পর সন্তানকে জন্ম দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সেই তরুণী। কিন্তু তার সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে তার পরিবার। পরিবারের সদস্য এবং তার প্রেমিক তাকে ছেড়ে চলে গেলেও সব প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে শেষ পর্যন্ত সন্তানকে জন্ম দেয় সে। সিনেমাটির প্রধান কয়েকটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রীতি জিনতা, সাইফ আলী খান এবং চন্দ্রচূড় সিং।

প্রিয় পাঠক, উপরে উল্লেখিত সিনেমাগুলোর ছাড়া আরো কোন সিনেমাকে আপনার কাছে সময়ের আগে বা প্রগতিশীল বলে মনে হয়েছে তা আমাদের জানিয়ে দিন মন্তব্যে। আর উপরের সিনেমাগুলোর মধ্যে কোন সিনেমাটি আপনার কাছে বেশী ভালো লেগেছে তাও জানিয়ে দিতে পারেন মন্তব্যে।

আরো পড়ুনঃ
ভিলেনের চরিত্রে পর্দা মাতানো বলিউড সুপারস্টারদের যত সিনেমা
বলিউডের প্রতীক্ষিত আলোচিত ১১টি নারী কেন্দিক সিনেমা!
সিনেমার পর্দায় নায়ককে ছাপিয়ে গেছেন যেসব বলিউড নায়িকারা!

By নিউজ ডেস্ক

এ সম্পর্কিত

%d