প্রত্যেক তারকাই তাদের সিনেমা নয় গর্ব করতে চান – বক্স অফিসে সফল হোক বা ব্যর্থ হোক। মুক্তির পর নিজের অভিনয়কৃত সিনেমা নিয়ে প্রকাশ্যে আফসোস করতে সচরাচর দেখা যায়না তারকাদের। তবে হয়ত এমন কিছু সিনেমা আছে, যেগুলোর মান এতই খারাপ যে, তারকারা এই সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য একসময় আফসোস করেছেন। আর সেই আফসোসটাও আবার প্রকাশ্যে। ফিল্মীমাইকের আজকের প্রতিবেদনে বলিউডের এরকম ৮ জন তারকার কথা থাকছে যারা নিজেদের সিনেমা নিয়ে প্রকাশ্যে তাদের হতাশা ব্যক্ত করেছেন।
১। শহীদ কাপুর (শানদার)
করণ জোহর প্রযোজিত ‘শান্দার’ সিনেমাটি মুক্তির পর বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পরে। সাধারন দর্শক থেকে সমালোচক সবার সমালোচনায় বিদ্ধ হয় সিনেমাটি। পরবর্তীতে ‘কবির সিং’ মুক্তির সময় একটি সংবাদ মাধ্যমের সাথে আলাপকালে নিজের আফসোস তুলে ধরেন শহীদ কাপুর। তিনি বলেন, ‘আমি যদি পারতাম তাহলে আমার সিনেমা ক্যারিয়ার থেকে ‘শানদার’ এর নাম মুছে দিতাম। আমি খুব বাজে কিছু সিনেমা করেছি এরমধ্যে এটি অন্যতম।’
২। অমিতাভ বচ্চন (আগ)
বলিউডের সর্বকালের অন্যতম সেরা এই অভিনেতার সম্ভবত সবচেয়ে বাজে সিনেমা রাম গোপাল ভার্মার ‘আগ’। সিনেমাটিতে অভিনয় তার ভুল ছিল উল্লেখ করে অমিতাভ বচ্চন বলেন, ‘আমি মনে করি একটি সিনেমার ব্যর্থতার জন্য পরিচালক এবং অভিনেতার দায়িত্ব নেয়া উচিত। আমি সিনেমাটিতে আমার জায়গা থেকে সততার সাথে কাজ করেছি। হয়তো, এটা সঠিক স্বিদ্ধান্ত ছিলো না, আমরা মেনে নিয়েছি।’
৩। অজয় দেবগন (রাসক্যাল/হিম্মতওয়ালা)
নিজের স্বছন্দের জায়গা থেকে বের হয়ে কোন সিনেমা করা এবং সেটা আফসোসের কারন হয়ে দাঁড়ানো – এমনটাই ঘটেছে অজয় দেবগনের সাথে। ‘রাসক্যাল’ এবং ‘হিম্মতওয়ালা’ সিনেমা দুটি এই তারকার জীবনের সবচেয়ে বড় আফসোসের নাম। এ প্রসঙ্গে অজয় দেবগন বলনে, ‘৮০ ভাগ ক্ষেত্রেই আমি যখন কোন সিনেমার কাজ করি সে সময়ই আমি বুঝতে পারি এটি ভালো হবে কি না। ওই সিনেমাগুলো প্রিমিয়ারে বা ট্রায়াল শোতে আমি দেখি না। ‘রাসক্যাল’ এবং ‘হিম্মতওয়ালা’ সিনেমা দুটি আমি আজ পর্যন্ত দেখিনি। আমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আমার অনুভূতি।’
৪। ক্যাটরিনা কাইফ (বুম)
বলিউডে অভিষিক্ত হওয়া যেকারো জন্যই স্বপ্নের মত, কিন্তু পরে যদি সেটা নিয়ে আফসোস করতে হয় তাহলে কেমন লাগবে! এমনটাই হয়েছে ক্যাটরিনা কাইফের সাথে। পরবর্তীতে একটি সাক্ষাৎকারে ক্যাটরিনা কাইফ বলেন, ‘আমি যখন সিনেমাটিতে চুক্তিবদ্ধ হই, আমি ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতাম না। যদি আমি সেটা জানতাম তাহলে কখনোই এই সিনেমাটি করতাম না।’
৫। গোবিন্দ (কিল দিল)
সিনেমাটির দ্বিতীয় ভাগেই গোবিন্দর আফসোসের শুরু। খল চরিত্রে অভিনয়ের ইচ্ছে তার ছিলো কিন্তু পছন্দের কোন প্রস্তাব আসছিলো তার কাছে। এই প্রেক্ষিতে তিনি সিনেমাটিতে অভিনয় করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে গোবিন্দ বলেন, ‘আমার পরিবার আমাকে প্রস্তাবটি গ্রহন করতে বলেছিলো না হলে আমি হয়তো পিছিয়ে যাবো।’
৬। আমির খান (মেলা)
সিনেমা নির্বাচনের ক্ষেত্রে বলিউডের সবচেয়ে সচেতন অভিনেতা হলে হয় মি. পারফেকশনিষ্ট আমির খানকে। কিন্তু ‘মেলা’ সিনেমাটি তার ক্যারিয়ারের অন্যতম বড় আফসোস হয়ে থাকবে। সিনেমাটি নিয়ে পরবর্তীতে তাকে আফসোস করতেও দেখা গেছে।
৭। সাইফ আলী খান (হামসাকলস)
বলা হয়ে থাকে কোন চিত্রনাট্য ছাড়াই নির্মিত হয়েছে সিনেমা ‘হামসাকলস’। পরিচালক সাজিদ খানের মানহীন নির্দেশনা সিনেমাটি সাইফ আলী খানের জন্য দীর্ঘশ্বাস হয়ে থেকে গেছে। এ প্রসঙ্গে সাইফ আলী খান বলেন, ‘আমি সিনেমাটি করেছিলাম এটা চিন্তা করে যে এটি আমার বাজারকে আরো বর্ধিত করবে। কিন্তু অবশ্যই এটা ভালো ধারনা ছিলো না।’
৮। রাহুল বোস (মান গায়ে মোগল-এ-আজম)
ভিন্ন ধারার সিনেমায় রাহুল বোসের নিজস্ব একটা অবস্থান রয়েছে। কিন্তু মল্লিকা শেরাওয়াতের সাথে এই সিনেমাটি তার জন্য একটা অনুতাপ ছাড়া আর কিছুই না। সিনেমাটি প্রসঙ্গে তিনি একবার বলে ছিলেন যে মাঝে মাঝে তিনি তার বাজে সিনেমাটির কথা চিন্তা করে পুরো ঘেমে যান।
এর বাইরে আর কোন অভিনেতার কি সিনেমা থাকতে পারে যেগুলো নিয়ে সিনেমাটির অভিনেতাদের অনুতপ্ত হওয়া উচিত বলে মনে করছেন আপনারা?
আরো পড়ুনঃ
প্রেক্ষাগৃহে ফিরছে বলিউড: একদিনে ছয় সিনেমার মুক্তি ঘোষনা
বাস্তব জীবনের গল্প নিয়ে নির্মিত বলিউডের আলোচিত কিছু সিনেমা