২০২০ সালে মার্চ থেকে করোনা মহামারীর কারনে স্থবির হয়ে যায় বলিউড সহ ভারতের সব সিনেমার মুক্তি। করোনা পরবর্তি সময়ে অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘বেল বোটম’ দিয়ে বলিউডে নতুন সিনেমা মুক্তির ধারাবাহিকতা। কিন্তু সিনেমাটি বক্স অফিসে ব্যার্থ হয়েছিলো। এরপর গত বছরের নভেম্বরে আবারো শুরু হয়ে সিনেমার মুক্তি। ৫ই নভেম্বর দিওয়ালী উপলক্ষ্যে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সুরিয়াবংশী’ সিনেমাটি দুর্দান্ত ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন করে। আর ডিসেম্বরে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘স্পাইডার ম্যানঃ নো ওয়ে হোম’ এবং ‘পুষ্পা’ সিনেমাগুলো নতুন আশার আলো দেখায় নির্মাতাদের। কিন্তু সম্প্রতি ওমিক্রন সংক্রমণের কারনে আবারো সিনেমায় করোনার প্রভাব পরতে শুরু করেছে।
নতুন বছরের শুরুতে ভারতে করোনার নতুন এই ভেরিয়েন্ট ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। করোনার নতুন এই সংক্রমণের কারনে দিল্লীতে সব প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। এছাড়া মুম্বাই, কলকাতা, তামিল নাড়ু সহ ভারতের অন্যান্য বড় শহরগুলোতে ৫০% আসনে দর্শক নিয়ে সিনেমা প্রদর্শনের নির্দেশনা জারি করেছে রাজ্য সরকারগুলো। এই প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে পিছিয়ে গেছে ‘জার্সি’, ‘আরআরআর’, ‘রাধে শ্যাম’ সিনেমাগুলোর মুক্তি। জানা গেছে অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘পৃথ্বীরাজ’ এবং আলিয়া ভাট অভিনীত ‘গাঙ্গুবাই কাঠিয়াওয়াড়ি’ সিনেমাটি দুটিও নির্ধারিত তারিখে মুক্তি না দেয়ার চিন্তা করছেন নির্মাতারা।
এদিকে যথা সময়ে সিনেমাগুলো মুক্তি না পাওয়ার কারনে বলিউড ২০০০ কোটি রুপি ক্ষতির মুখে পরতে যাচ্ছে। বলিউড ভিত্তিক একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের প্রথম ভাগে বলিউড ১০০০ কোটি রুপির বক্স অফিস আয় হাতছাড়া করতে যাচ্ছে। এই সময়ে বড় তারকার বড় বাজেটের বেশ কয়েকটি সিনেমা মুক্তির কথা ছিলো। মুক্তি প্রতীক্ষিত প্রতিটি সিনেমাই গত কয়েক বছর ধরে ভক্তদের কাছে আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে।
বলিউডের সিনেমা বিষয়ক ট্রেড বিশেষজ্ঞদের অনুমান অনুযায়ী, ‘আরআরআর’ (হিন্দি) এবং ‘রাধে শ্যাম’ (হিন্দি) সিনেমাগুলো বক্স অফিসে যথাক্রমে ২০০ কোটি এবং ১৫০ কোটি রুপি আয়ের সম্ভাবনা ছিলো। এছাড়া এই সময়ে অন্যান্য বড় সিনেমাগুলো মধ্যে ‘পৃথ্বীরাজ’ (১৫০ কোটি), ‘গাঙ্গুবাই কাঠিয়াওয়াড়ি’ (৭০/৮০ কোটি), ‘বচ্চন পাণ্ডে’ (২০০ কোটি), ‘শমসেরা’ (১৫০ কোটি), ‘বুল বুলাইয়া ২’ (৭৫/৮০ কোটি) এবং ‘জয়েসভাই জোয়ার্দার’ (৮০ কোটি) আয়ের সম্ভাবনা ছিলো।
শুধুমাত্র প্রথমভাগ নয়, ২০২২ সালের দ্বিতীয়ভাগেও বেশ কয়েকটি সিনেমা মুক্তি কথা রয়েছে। উপরের সিনেমাগুলোর মুক্তি পিছিয়ে যাওয়ার কারনে এর প্রভাব পরবে বছরের দ্বিতীয় ভাগে মুক্তি প্রতীক্ষিত সিনেমাগুলোর উপর। এই সময়ে মুক্তি অপেক্ষায় থাকা সিনেয়ামগুলো বক্স অফিসে আরো ১০০০ কোটি রুপি আয়ের ক্ষমতা রাখে বলে মনে করছেন বলিউড সিনেমার ট্রেড বিশেষজ্ঞরা। এরমধ্যে ‘লাল সিং চাড্ডা’ (৩০০/৩৫০ কোটি), ‘কেজিএফ চ্যাপ্টার ২’ (১৫০/২০০ কোটি), ‘রানওয়ে ৩৪’ (১৫০ কোটি), ‘ময়দান’ (১৫০/২০০ কোটি) এবং ‘হিরোপান্তি ২’ (১০০/১২০ কোটি) উল্লেখযোগ্য।
করোনার নতুন এই মহামারী শেষে ভারতে প্রেক্ষাগৃহগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে কত সময় লাগে এখন সেটাই দেখার বিষয়। বিগত দুই বছর ধরে আটকে থাকা সিনেমাগুলো বাজেটও দিন দিন বাড়ছে আনুপাতিক হারে। নতুন স্বাভাবিকে সিনেমাগুলোর মুক্তির মাধ্যমে নির্মাতা এবং প্রদর্শকদের মাঝে হাসি ফুটাবে এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরো পড়ুনঃ
বলিউডের ওমিক্রনের থাবাঃ পিছিয়ে গেলো ‘পৃথ্বীরাজ’ সিনেমার ট্রেলার মুক্তি!
স্থগিত হয়ে গেলো মুক্তিঃ করোনায় বিশাল ক্ষতির মুখে ‘আরআরআর’
তামিল নাড়ুতে প্রেক্ষাগৃহ বন্ধঃ পিছিয়ে গেলো অজিত কুমারের ‘ভালিমাই’