বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় এবং শক্তিশালী অভিনেত্রী কারিনা কাপুর। ইতিমধ্যে অনেকগুলো সিনেমায় তিনি তার জনপ্রিয়তা এবং অভিনয় শক্তির প্রমান দিয়েছেন। ‘রিফিউজি’, ‘যাব উই মেট’ এবং ‘চামেলী’ এর মত সিনেমায় তার অভিনয় তাকে দিয়েছে অসাধারন স্বীকৃতি। তবে কারিনা কাপুরের ছেড়ে দেয়া এমন অনেক সিনেমা আছে যা বলিউডে তার অবস্থানকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারতো।
২০১৩ সালে কারিনা কাপুর একটি সাক্ষাৎকারে নিজেই বলেছেন তার এই গল্প। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,’আমার মত আর কোন নায়িকা নেই যে তার অভিনয়কৃত সিনেমার বেশি সিনেমা ছেড়ে দিয়েছে। আমি মনে করি আমি পাগল… আমি যদি কোন সিনেমা করতে না চাই আমি সেটা করব না। আমি বাসায় বসে থাকবো, উপভোগ করবো, পার্টি এবং ভ্রমন করবো’। এরকম অনেক সিনেমা আছে যেগুলো কারিনা কাপুর ছেড়ে দিয়েছেন। কারিনা কাপুরের ছেড়ে দেয়া সিনেমাগুলোর মধ্যে থেকে উল্লেখযোগ্য ৭টি সিনেমা নিয়ে আজকের প্রতিবেদন।
১। কাহো না… পেয়ার হ্যা
২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘রিফিউজি’ সিনেমার মাধ্যমে অভিষেক হয় কারিনা কাপুরের। কিন্তু বলিউডের গল্পটা অন্যরকম হওয়ার ছিলো। হৃত্বিক রোশন অভিনীত ব্লকবাষ্টার সিনেমা ‘কাহো না… পেয়ার হ্যা’ এ সোনিয়া চরিত্রে অভিনয়ের কথা ছিলো কারিনা কাপুরের। সিনেমাটির কিছু দৃশ্যের শুটিংও তিনি। তিনি মাঝপথে চরিত্রের গুরুত্ব কম উল্লেখ করে সিনেমাটি ছেড়ে দেন তিনি। এরপর নির্মাতা রাকেশ রোশন নতুন মুখ আমিশা প্যাটেলকে নিয়ে নির্মান করেন এবং বক্স অফিসে ব্লকবাষ্টার ব্যবসা করে এই সিনেমা।
২। ব্ল্যাক
সঞ্জয় লীলা বানসালি পরিচালিত ‘ব্ল্যাক’ সিনেমায় অভিনয় করার কথা ছিল কারিনা কাপুরের। কিন্তু সেই সময়ে অভিষেক বচ্চন এবং কারিশমা কাপুরের বাগদান ভেঙে যাওয়ায় পারিবারিক সমস্যার কারনে সিনেমাটি থেকে সরে দাঁড়ান কারিনা কাপুর। পরবর্তীতে চরিত্রে রানী মুখার্জি অভিনয় করেন এবং একাধিক পুরষ্কার জিতেন।
৩। কাল হো না হো
হ্যাঁ, ‘কাল হো না হো’ সিনেমায় অভিনয় করার ছিলো কারিনা কাপুরের। কিন্তু দুইটি কারনে সিনেমাটি ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। করন জোহর জানিয়েছেন সিনেয়ামটির জন্য কারিনা কাপুর শাহরুখ খানের পর্যায়ের পারিশ্রমিক দাবি করেছিলেন। এছাড়া এর কিছুদিন আগে মুক্তি পেয়েছিলো কারিনা অভিনীত কুনাল কহিল পরিচালিত সিনেমা ‘মুজসে দোস্তি করোগে’ যা বক্স অফিসে ফ্লপ হয়েছিলো। কারিনা বলেছিলেন আদিত্য চোপড়ার সহকারী কুনাল কহিল ব্যর্থ হয়েছেন তাই করন জোহরের সহকারী নিখিল আদভানিও বিশ্বাসযোগ্য না তার কাছে। পরে সিনেমাটিতে প্রীতি জিনতা অভিনয় করেন এবং বলিউডের অন্যতম সেরা সিনেমা হিসেবে আবির্ভুত হয় ‘কাল হো না হো’।
৪। ফ্যাশন
মাধুর বান্ধারকারের ‘হিরোইন’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন কারিনা কাপুর। কিন্তু মজার বিষয় হলো ‘হিরোইন’ সিনেমার জন্য তিনি পরিচালকের দ্বিতীয় পছন্দ ছিলেন। আর এই নির্মাতার আগের সিনেমা ‘ফ্যাশন’ এর জন্য প্রথম পছন্দ ছিলেন কারিনা কাপুর। কিন্তু অন্যান্য সিনেমা নিয়ে ব্যস্ততার কারনে ‘ফ্যাশন’ সিনেমাটি ছেড়ে দেন তিনি। এরপর মাধুর বান্দারকার সিনেমাটির জন্য প্রিয়াংকা চোপড়াকে প্রস্তাব দিলে সেটা লুফে নেন প্রিয়াংকা। আর এই সিনেমার জন্য পরবর্তীতে জাতীয় পুরষ্কারও জিতেন এই অভিনেত্রী।
৫। গালিওকি রাসলীলা – রামলীলা
সঞ্জয় লীলা বানসালি পরিচালনায় ‘গালিওকি রাসলীলা – রামলীলা’ সিনেমায় অভিনয়ের কথা ছিলো কারিনা কাপুরের। সিনেমাটিতে চুক্তিবদ্ধও হয়েছিলেন এই তারকা। শুধু তাই নয়, সে সময় বেশ কিছু সাক্ষাৎকারে সিনেমাটি নিয়ে নিজের উচ্ছাসও প্রকাশ করেছিলেন এই তারকা। কিন্তু শুরু আগেই সিনেমাটি সরে দাঁড়ান তিনি এবং ‘গোরি তেরে পেয়ার ম্যা’ সিনেমায় অভিনয় করেন। এরপর তার জায়গায় অভিনয় করেন দীপিকা পাডুকোন। অনেকের মতে সিনেমাটি বলিউডে রানভীর-দীপিকা জুটি ছাড়াও দীপিকাকে একজন শক্তিশালী অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
৬। চেন্নাই এক্সপ্রেস
গুঞ্জন আছে রোহিত শেঠী পরিচালিত ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ সিনেমায় শাহরুখ খানের বিপরীতে অভিনয় করার কথা ছিল কারিনা কাপুরের। কিন্তু শিডিউল সংক্রান্ত জটিলতার কারনে শেষ পর্যন্ত সিনেমাটি করতে পারেননি তিনি। তার পরিবর্তে ব্লকবাষ্টার সিনেমায় শাহরুখ খানের বিপরীতে অভিনয় করেন দীপিকা পাডুকোন। তবে একবার প্রশ্ন হলেও এ ব্যাপারে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি সিনেমাটির নির্মাতা রোহিত শেঠী।
৭। কুইন
‘কুইন’ সিনেমায় অভিনয়ের না করার ব্যাপারে কারিনা কাপুর ২০১৯ সালে একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ আমি কখনোই পিছন ফায়ার তাকাই না। আমি যখন কোন সিনেমা না করি, সেটা ওই সময়ে আমার জন্য মাননসই না হওয়ার কারনে।’ এরপর সিনেমাটিতে অভিনয় করেন কঙ্গনা রানাওয়াত এবং সিনেমাটিতে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় পুরষ্কার অর্জন করেন।
উপরোক্ত সিনেমাগুলোর মধ্যে কোন সিনেমায় আপনি কারিনা কাপুরকে দেখতে চেয়েছিলেন ক=ঝটপট মন্তব্যে জানিয়ে দিন আমাদের।
আরো পড়ুনঃ
বলিউডের ৭ অভিনেতা যারা সহ-অভিনেতার সাথে সমস্যার কারনে সিনেমা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন