একে অন্যের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করলেন চিত্রনায়িকা তমা মির্জা এবং তার স্বামী হিশাম চিশতী। জানা গেছে সম্প্রতি দুবাই থেকে ছুটি কাটিয়ে দেশে ফেরার পর থেকে তাঁদের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। সর্বশেষ গত ৫ই ডিসেম্বর রাতে তাঁদের মধ্যে ঝগড়ার এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়, এর পরই তারা দুজনে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বামীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে যৌতুক, নির্যাতন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন চিত্রনায়িকা তমা মির্জা। অন্যদিকে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে চিত্রনায়িকা তমা মির্জার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেছেন তার স্বামী হিশাম চিশতি। মামলায় তমা মির্জা ছাড়াও তার পরিবারের কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা দুটি হয়েছে বাড্ডা থানায়।
একটি অনলাইন পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী মামলার এজাহারে বিয়ের পর থেকে তাঁর স্বামী হিশাম চিশতী বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য মারধর করতেন বলে উল্লেখ করেছেন তমা মির্জা উল্লেখ। শুধু তাই নয়, ফেসবুকে নিজের পরিচয় গোপন করে মানহানিকর কথাবার্তা বলতেন। এছাড়া হিশাম এই নায়িকার বাবা-মাকে ভয়ভীতি দেখানো, হত্যার হুমকি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাঁদের ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি প্রকাশের ভয়ভীতি দেখান।
এদিকে তমা মির্জার স্বামী হিশাম চিশতী স্ত্রী তমা, তাঁর শ্বশুর–শাশুড়ি এবং ড্রাইভারের নামে মামলা করেন। হিশাম তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেনা যে, বিয়ের পর বিভিন্ন সময়ে বাবা-মায়ের প্ররোচনায় তমা হিশামের কাছ থেকে মোট ২০ লাখ টাকা ধার হিসেবে নেন। সেই ধারের টাকা ফেরত চাইলে কালক্ষেপণ শুরু হয়। এমন পরিস্থিতিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর হিশাম কানাডা থেকে দেশে আসেন। তখন তমাকে তাঁর নিজের বাসায় থাকতে বলেন। কিন্তু নানা অজুহাতে তমা স্বামীর বাসায় না গিয়ে বাবার বাসাতেই থাকেন।
এরপর হিশাম শ্বশুরবাড়িতে গেলে তাঁর সঙ্গে তমাসহ বাড়ির সবাই খারাপ আচরণ শুরু করেন। একপর্যায়ে ৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে তমা মির্জা হিশামকে তাঁর বাবার বাড্ডার বাসায় আসতে বলেন। সেই রাতে নানা বিষয়ে আলোচনার পর ধার নেওয়া ২০ লাখ টাকা চাইলে বাসার সদস্যদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় হিশামের। এর একপর্যায়ে বাড়ির সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে হিশামের ওপর আক্রমণ করেন। ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে তাঁকে খুন করার চেষ্টা করা হয়।
উল্লেখ্য যে, ২০১০ সালে এম বি মানিক পরিচালিত ‘বলো না তুমি আমার’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে সিনেমায় আত্মপ্রকাশ ঘটে তমা মির্জার। ‘মনে প্রাণে আছো তুমি’, ‘পালাবার পথ নেই’, ‘মানিক রতন দুই ভাই’, ‘ছোট্ট সংসার’ প্রভৃতি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। শাহনেওয়াজ কাকলী পরিচালিত ‘নদীজন’ ছবিতে অভিনয় করে পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তমা মির্জা। ২০১৯ সালের ৭ মে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক হিশাম চিশতিকে বিয়ে করেন তমা মির্জা।