শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়ে অবশেষে আদালতের রায়ে জায়েদ খান হাসলেন শেষ হাসি। সম্প্রতি আদালতের রায়ে সৃষ্ট জটিলতার সমাধান দিয়ে জায়েদকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর সে রায় পাওয়ার পর এবার শপথ নিলেন সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান, সহ-সভাপতি ডিপজল, সুচরিতা, অরুনা বিশ্বাস ও জয় চৌধুরী। শুক্রবার (৪ঠা) মার্চ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এফডিসিতে তাদের শপথ পাঠ করান শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন।
শপথ পাঠ করানোর আগে ইলিয়াস কাঞ্চন গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ি আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাবো। গঠনতন্ত্রের বাইরে আমাদের যাওয়ার সুযোগ নেই। সাধারণ সম্পাদক পদটি নিয়ে জটিলতা ছিলো। জায়েদ খান আমাকে কোর্টের সার্টিফাইড কপি দেখিয়েছে, তাই তাকে আমি শপথ পাঠ করাচ্ছি। আদালতের রায়তো আর অমান্য করতে পারি না।’
এর আগে ভোটে জেতা জায়েদ খান চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে আইনী লড়াইয়ে হাইকোর্টের রায় পেয়েছেন বুধবার। সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনী আপিল বোর্ড কর্তৃক নিপুণ আক্তারকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা ও জায়েদের প্রার্থিতা বাতিলের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। দায়িত্ব নেয়ার পর এ প্রসঙ্গে জায়েদ খান বলেন,‘আদালতে দৌড়াতে দৌড়াতে আমি ক্লান্ত। অবশেষে দায়িত্ব শপথ নিয়ে স্বস্তি পাচ্ছি। এখন কাজ করতে চাই।’
আদালতের এই রায়ে উচ্ছ্বসিত জায়েদ খান সেসময় জানিয়েছিলেন, ‘সত্যের জয় হয়েছে। আমি শিল্পীদের ভোটে জয়ী সাধারণ সম্পাদক। তবু কিছু মানুষ ষড়যন্ত্র করে আমাকে চেয়ারে বসতে দেয়নি। এই রায়ে আমি সবার কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আইনজীবী, মিডিয়া, ভক্ত সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি।’ তবে ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে জানিয়ে জায়েদ খান এসময় আরও বলেন, ‘আমার কার্যক্রম, জনপ্রিয়তা তাদের ঈর্ষার কারণ। তারা আবার আটকানোর চিন্তা করবে এই রায়কে। তারা প্রক্রিয়া চালাবে শুধু কাজ বন্ধ করে।‘
এদিকে এখন সবার একসাথে কাজ করা উচিৎ উল্লেখ করে শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন ডিপজল বলেন, ‘আদালতের রায় মেনে সবার এখন এক হয়ে কাজ করা উচিত। শিল্পী সমিতির নির্বাচন ঘিরে অনেক নোংরামি হয়েছে আর নয়। এফডিসিতে কেন বহিরাগত আসবে? কে এনেছে? কেন এনেছে? কার এত বড় সাহস বহিরাগত আনার? লোক আনলেই সব কিছু? এত সহজ না।’
অন্যদিকে ১৮ সংগঠন কতৃক জায়েদ খানকে নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে ডিপজল আরো বলেন, ‘কেন জায়েদকে অবাঞ্ছিত করবে? ওর অন্যায় কি? বললেই সব হয়ে গেল। আমাদের মাদার সংগঠন প্রযোজক সমিতি। সেই সমিতি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। আছে পরিচালক সমিতি। সেই সমিতির সভাপতিই তো হাত তুলে জয় করায়। তাকেই রেড কার্ড দেখানো হয়েছে। যে সমিতির সভাপতি হাত তুলে জয় ঘোষণা করেন তাকে আগে অবাঞ্ছিত করা উচিত ছিল। তিনি (সোহানুর রহমান সোহান) অন্যায় করেছেন।’
প্রসঙ্গত, সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কারণে এরআগে শপথ নিয়েছিলেন ১১ জন সদস্য। তবে তাতে অংশ নেননি ২৮ জানুয়ারির এ নির্বাচনে জয়ী মিশা সওদাগর-জায়েদ খান প্যানেলের কেউই। সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে সুরাহা না হওয়া এবং জায়েদ খান তার চেয়ার ফিরে না পাওয়ায় কেউই আপাতত শপথ নিতে চান না বলে জানিয়েছিলেন তারা। তবে পরবর্তীতে ব্যতিক্রম হিসেবে তাদের প্যানেল থেকে শপথ নেন অঞ্জনা। আর এবার শপথ নিলেন জায়েদ খান সহ মোট পাঁচজন।
আরো পড়ুনঃ
শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ঝুলছে নতুন তালাঃ বদলে গেছে চেয়ার
চিত্রনায়ক জায়েদ খানকে বয়কট করেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের ১৮ সংগঠন
নির্বাচন নিয়ে অভিযোগঃ নিপুণের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জায়েদ