‘মিশন এক্সট্রিম’ প্রিমিয়ারে নিজের বক্তব্যের বিতর্কে যা বললেন আরিফিন শুভ!

‘মিশন এক্সট্রিম’ প্রিমিয়ারে

‘মিশন এক্সট্রিম’ প্রিমিয়ারে

করোনা মহামারী শেষে সম্প্রতি গত ৩রা ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে আরিফিন শুভ অভিনীত সিনেমা ‘মিশন এক্সট্রিম’। সিনেমাটি মুক্তির পর দর্শক সমালোচকদের প্রশংসা কুঁড়াতে সক্ষম হয়েছে সিনেমাটি। আর এই সিনেমায় অভিনয় এবং পর্দা উপস্থিতির জন্য ব্যপকভাবে প্রশংসিত হয়েছেন আরিফিন শুভ। কিন্তু সিনেমাটির প্রিমিয়ারে আরিফিন শুভর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই বক্তব্যে তার পোশাক এবং স্বাধীনতার কিছু কথা নিয়ে চলছে ভক্তদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মতামত। অবশেষে ‘মিশন এক্সট্রিম’ প্রিমিয়ারে নিজের বক্তব্যের বিতর্কে মুখ খুললনে সময়ের জনপ্রিয় এই অভিনেতা।

নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তা শেয়ারের মাধ্যমে এ প্রসঙ্গে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন আরিফিন শুভ। তিনি বলেন, ‘আমার ক্ষুদ্র প্রয়াস, যে চরিত্রটিতে কাজ করছি সে চরিত্রটিতে বসবাস করার জন্য। এখানে আহামরি কোনো বিষয় নেই। বঙ্গবন্ধু’র শুটিং যখন শুরু হয় তখন কেউ যদি আমাকে দেখে থাকেন, তাহলে দেখবেন আমি অফস্ক্রীণেও এ কাপড় পরে থাকতাম। তখন অবশ্য মাথায় কোনো কাপড় পরতাম না। পরে অবশ্য অনেকে আমার মাথায় কিছু না কিছু দেখেছেন। এর একটি কারণ আছে, সে কারণটি বলতে চাই ক্ষোভে দুঃখে। কিন্তু আমি তা বলবো না, তাতে আমার অন্য আরেকটি সন্তানের ক্ষতি হবে, তার নাম নূর।‘

এছাড়া মাথায় বঙ্গবন্ধু লিখা টুপি পরা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রিমিয়ারে আমি টুপিটা পরে যেতে চাইনি। আমাদের ৭ই মার্চের ভাষণের দৃশ্যায়ণ চলছিলো। সেখানে যারা ক্রাউডের (বক্ততা শুনতে আসা জনতা) অভিনয় করছিলেন তাদের অনেকের মাথায় এ টুপিটি (সবুজ-সাদা টুপিতে বঙ্গবন্ধু লেখা) পরা ছিল। বিষয়টি ইন্টারেস্টিং লাগলো। আমার কাছে মনে হলো, গায়ের পোশাকের সাথে মাথায় অন্য কাপড় ভালো লাগবে না, আমি এটি (বঙ্গবন্ধু লেখা টুপি) পরে চলে যাই। অনেক দিন ধরে সেভেনটি ওয়ান, ফোরটি এইট, ফিফটি টু, সিন থার্টি ওয়ান, থার্টি টু- ব্যাপারগুলো আমার সঙ্গে চলছে।‘

‘মিশন এক্সট্রিম’ প্রিমিয়ারে সিনেমাটি দেখার সাথে দেশপ্রেম সংক্রান্ত মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মিশন এক্সট্রিমের গল্প যখন সানী সানোয়ার আমাকে প্রথম শোনায় সেখান থেকে একটা জিনিস আমি প্রথম পেয়েছিলাম- দেশপ্রেম। দেশের প্রতি ভালোবাসা, দেশের প্রতি মায়া। ছবিটির প্রথম পর্ব যারা দেখেছেন, তারা হয়তো বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন। মিশন এক্সট্রিমের দ্বিতীয় পর্ব যখন আসবে তখন আরও পরিষ্কার হবে এটি দেশপ্রেমের ছবি। দেশকে ভালোবাসার একটি ছবি। সেখান আমার ওই কথা বলা।‘

আরিফিন শুভ আরো বলেন, ‘একাত্তরকে সেভেনটি ওয়ান বলা যদি অপরাধ হয়, আমি ক্ষমা চাইছি। বায়ান্নকে ফিফটি টু বলাতে যদি অন্যায় হয়ে থাকে তাহলে আমি ক্ষমা চাইছি। কিন্তু বায়ান্নকে তেপান্ন তো বলিনি। বায়ান্নকে তো একান্ন তো বলিনি। একাত্তরকে তো ৭৩ বলিনি। আমার জীবনে এ মুহূর্তে যে ঘটনাগুলো ঘটছে সেখান থেকে হয়তো সেভেনটি ওয়ান, ফিফটি টু বলেছি। কি অপরাধ করেছি? যদি অপরাধ হয়ে থাকে আমাকে ক্ষমা করবেন।’

ভালো ছবির সাথে থাকার জন্য এবং ভালো ছবি দেখার জন্য তিনি সবার প্রতি অনুরোধ করেন। এই অভিনেতা বলেন সিনেমা যারই হোক ভালো সিনেমা দেখলে এই ইন্ডাস্ট্রিই উপকৃত হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি তো মানুষ, ভুল-ত্রুটি হতেই পারে। কিন্তু আজকে যেখানে হল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে সেখান থেকে আমরা একটু চেষ্টা করছি। সে চেষ্টাটা কেনো অনেকের ভালো লাগছে না। একটা সিনেমা দেখতে এলে অনেক ক্ষতি কার হয়ে যাচ্ছে, কাদের হয়ে যাচ্ছে? আমি সবসময় বলেছি, ভালো ছবি যারই হোক আপনারা হলে গিয়ে দেখুন।’

কুল নিবেদিত আরিফিন শুভর ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে কপ ক্রিয়েশনের ব্যানারে। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তথা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ‘সিটিটিসি’র কিছু শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হয়েছে এই সিনেমা। সিনেমাটির গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন পুলিশ সুপার সানী সানোয়ার নিজেই। সিনেমাটির সহযোগী প্রযোজক হিসেবে রয়েছে মাইম মাল্টিমিডিয়া ও ঢাকা ডিটেকটিভ ক্লাব।

আরিফিন শুভ ছাড়াও সিনেমাটিতে আরো অভিনয় করেছেন ‘ঢাকা অ্যাটাক’ খ্যাত তাসকিন রহমান, জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী, সাদিয়া নাবিলা ও সুমিত সেনগুপ্ত। আরো কয়েকটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, মাজনুন মিজান, ইরেশ জাকের, মনোজ প্রামাণিক, আরেফ সৈয়দ, সুদীপ বিশ্বাস দীপ, রাশেদ মামুন অপু, এহসানুল রহমান, দীপু ইমাম, সৈয়দ নাজমুস সাকিবসহ অনেকে।

আরো পড়ুনঃ
‘মিশন এক্সট্রিম’ দিয়ে প্রেক্ষাগৃহে ফিরলেন দর্শকঃ টিকেট বিক্রিতে রেকর্ড
সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে বিগ বাজেট পুলিশ থ্রিলার ‘মিশন এক্সট্রিম’
যে পাঁচটি কারনে আপনার দেখা উচিৎ আরিফিন শুভর ‘মিশন এক্সট্রিম’

By নিউজ ডেস্ক

এ সম্পর্কিত

%d