‘মিশন এক্সট্রিম’ দিয়ে প্রেক্ষাগৃহে ফিরলেন দর্শকঃ টিকেট বিক্রিতে রেকর্ড

‘মিশন এক্সট্রিম’ দিয়ে প্রেক্ষাগৃহে

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহের সবচেয়ে বড় হতাশা দর্শক শূন্যতা। মাঝে মাঝে কিছু সিনেমা দর্শক আকৃষ্ট করতে পারলে ছিলো না ধারাবাহিকতা। আর মরার উপর খরার ঘা হয়ে আসে করোনা। প্রায় দুই বছর নতুন কোন সিনেমা নিয়ে দেখা যায়নি দর্শক এবং প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের মধ্যে উত্তেজান। অবশেষে করোনা মহামারী শেষে নতুন দিনের আলো দেখাচ্ছে ৩রা ডিসেম্বর মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘মিশন এক্সট্রিম’। প্রথম দুইদিনের রিপোর্ট অনুযায়ী ‘মিশন এক্সট্রিম’ দিয়ে প্রেক্ষাগৃহে ফিরছেন ঢাকাই সিনেমার দর্শক। এছাড়া টিকেট বিক্রির দিক থেকেও সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে সিনেমাটি।

‘ঢাকা অ্যাটাক’ সিনেমার সাফল্যের পর পুলিশ থ্রিলার গল্পের ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমাটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ ছিলো তুঙ্গে। নানা প্রজন্মের জনপ্রিয় তারকাদের নিয়ে নির্মিত সিনেমাটি দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছে শতভাগ। মুক্তির প্রথম দিনেই দর্শক টানতে সক্ষম হয়েছে সিনেমাটি। দেশের নানা প্রান্তের ৫০টির মতো হলে দেখা যাচ্ছে সিনেমাটি। পরিচালক সানী সানোয়ার সূত্রে জানা গেছে প্রায় সবগুলো হলেই হাউজফুল শো চলার খবর মিলেছে।  ঢাকার সিনেপ্লেক্সগুলোতে ভিড় ছিলো অনেক বেশি। দর্শক লাইন দিয়ে টিকিট কিনেছেন। অনেকে অগ্রিম টিকিট বুকিং করছেন।

সিনেমাটি দেখতে প্রেক্ষাগৃহে দর্শক সমাগম প্রসঙ্গে স্টার সিনেপ্লেক্সের মিডিয়া ও মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এখানে দুর্দান্তভাবে যাত্রা শুরু করেছে ‘মিশন এক্সট্রিম’। মুক্তির দিনে আমাদের প্রতিটি শাখায় সিনেমাটির প্রায় সব শো হাউসফুল ছিল। দর্শক পুরো সিনেমা দেখছে, প্রশংসা করছে। ধারণা করছি, আস্তে আস্তে দর্শক আরও বাড়বে।‘

এছাড়া টিকেট বিক্রির দিক থেকে সিনেমাটি এগিয়ে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের এখানে যেসব বাংলা সিনেমা চলে, সেগুলো প্রায় অফ ট্র্যাক সিনেমা। সেই হিসেবে চলতি বছর আমরা যেসব বাংলা সিনেমা চালিয়েছি তাঁর মধ্যে ‘মিশন এক্সট্রিম’ টিকেট বিক্রির দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে, এটা বলা যায়। এই ধারা অব্যাহত থাকুক আমরা চাই, তাহলে আবারও ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়াবে।‘

এদিকে জানা গেছে সিনেমাটির মুক্তি উপলক্ষ্যে ‘মিশন এক্সট্রিম’ টিম ঢাকা শহর ও সাভারের একাধিক প্রেক্ষাগৃহ ঘুরেছে। সেসব জায়গায় দর্শক সমাগম প্রসঙ্গে একটি অনলাইন পত্রিকাকে পরিচালক, প্রযোজক ও কাহিনিকার সানী সানোয়ার, ‘আমরা দুপুর থেকে ঘুরেছি, শুনেছি সকালে দর্শক কম ছিল। তবে আমরা যখন গিয়েছি, প্রায় শো হাউসফুল ছিল। সাভারের সেনা অডিটোরিয়াম ও চন্দ্রিমাতে গিয়েছিলাম, সেখানকার দর্শক ছাত্র ও তরুণ। সেখানে আমি আরও দর্শক আশা করেছিলাম; সে কারণে একটু অখুশি ছিলাম, কিন্তু হলমালিকেরা খুশি। তাঁরা বলেছেন, গেল দুই-তিন বছরে এমন দর্শক হয়নি তাঁদের। আর খুলনা, যশোর, সিলেটসহ অন্য হলমালিকেরা একই চিত্রের কথা জানিয়েছেন আমাদের।’

সিনেমাটির অন্য পরিচালক ফয়সাল আহমেদও তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বেশ কিছু হাউজফুল শোয়ের ছবি শেয়ার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকে মিলে নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে ‘মিশন এক্সট্রিম’ নির্মাণ করেছি। প্রচার প্রচারণাতেও কমতি রাখিনি। কতোটা সফল হবো তা দর্শকদের উপর নির্ভর করছে। তবে প্রথমদিনের যা সাড়া এসেছে তাতে করে আশা জাগছে খুব ভালো কিছুর।’

উল্লেখ্য যে, সিনেমাটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ। এছাড়াও সিনেমাটিতে আরো অভিনয় করেছেন ‘ঢাকা অ্যাটাক’ খ্যাত তাসকিন রহমান, জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী, সাদিয়া নাবিলা ও সুমিত সেনগুপ্ত। আরো কয়েকটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, মাজনুন মিজান, ইরেশ জাকের, মনোজ প্রামাণিক, আরেফ সৈয়দ, সুদীপ বিশ্বাস দীপ, রাশেদ মামুন অপু, এহসানুল রহমান, দীপু ইমাম, সৈয়দ নাজমুস সাকিবসহ অনেকে।

কুল নিবেদিত আরিফিন শুভর ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে কপ ক্রিয়েশনের ব্যানারে। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তথা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ‘সিটিটিসি’র কিছু শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হয়েছে এই সিনেমা। সিনেমাটির গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন পুলিশ সুপার সানী সানোয়ার নিজেই। সিনেমাটির সহযোগী প্রযোজক হিসেবে রয়েছে মাইম মাল্টিমিডিয়া ও ঢাকা ডিটেকটিভ ক্লাব।

আরো পড়ুনঃ
সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে বিগ বাজেট পুলিশ থ্রিলার ‘মিশন এক্সট্রিম’
যে পাঁচটি কারনে আপনার দেখা উচিৎ আরিফিন শুভর ‘মিশন এক্সট্রিম’
মিশন এক্সট্রিম রিভিউ: দেশীয় প্রেক্ষাপটে আমাদের আন্তর্জাতিক মানের সিনেমা

By নিউজ ডেস্ক

এ সম্পর্কিত

%d