সুরিয়াবংশী রিভিউ: নিজস্ব স্টাইলে এখন পর্যন্ত রোহিত শেঠির সেরা সিনেমা

সুরিয়াবংশী রিভিউ

চলচ্চিত্রের নামঃ সুরিয়াবংশী (২০২১)
মুক্তিঃ নভেম্বর ০৫, ২০২১
অভিনয়েঃ অক্ষয় কুমার, ক্যাটরিনা কাইফ, গুলশান গ্রোভার, জ্যাকি শ্রফ, নিক্তিন ধীর, জাভেদ জাফরি, অভিমন্যু সিং, কোমুদ মিস্রা, রনবীর সিং এবং অজয় দেবগন প্রমুখ।
পরিচালনাঃ রোহিত শেঠি
প্রযোজনাঃ হিরু যশ জোহর, অরুণা ভাটিয়া, করণ জোহর, অপূর্ব মেহতা, রোহিত শেঠি
পরিবেশনাঃ রিলায়েন্স এন্টারটেইনমেন্ট এবং পিভিআর পিকচার্স
কাহিনীঃ রোহিত শেঠি
চিত্রনাট্যঃ ইউনুস সাজওয়াল
সম্পাদনাঃ বান্টি নাগি
চিত্রগ্রহনঃ জোমন টি. জন

প্রারম্ভিক কথাঃ সিঙ্গাম (অজয় দেবগন) এবং সিম্বা (রনবীর সিং) এরপর রোহিত শেঠি তার পুলিশ ইউনিভার্সের তৃতীয় চরিত্র সুরিয়াবংশীর জন্য বেছে নেন অক্ষয় কুমারকে। অ্যাকশন তারকা অক্ষয় কুমার আর অ্যাকশন নির্মাতা রোহিত শেঠির একসাথে কাজের ঘোষনার পর থেকেই আলোচনায় ছিলো ‘সুরিয়াবংশী’ সিনেমাটি। ২০২০ সালের মার্চে মুক্তির কথা থাকলেও করোনা মহামারীর কারনে বেশ কয়েকবার পিছিয়ে শেষ পর্যন্ত চলতি বছরের দিওয়ালী উপলক্ষ্যে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। এরমধ্যে ভারতের ওটিটি প্লাটফর্মগুলো থেকে বিশাল অংকের প্রস্তাব পেলেও তা বারবার ফিরিয়ে দিয়েছেন সিনেমাটির নির্মাতা রোহিত শেঠি। বিশাল পরিসরে নির্মিত সিনেমাটি বড় পর্দায় মুক্তির ব্যাপারে বরাবরই বদ্ধপরিকর ছিলেন তিনি। তাহলে কেমন হলো রোহিত শেঠির সর্বশেষ পুলিশ অভিযান? দর্শকদের প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ করতে পেরেছে সিনেমাটি? কেমন হলো রোহিত শেঠির পুলিশ ইউনিভার্সের নতুন এই অলংকরণ? আজকের রিভিউতে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করবো।

কাহিনী সংক্ষেপঃ সিনেমার গল্পের শুরুতে দেখা যায় ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ের সিরিজ বোমা বিস্ফোরণ দিয়ে। সেই ঘটনার ধারা বর্ননায় ছিলেন অজয় দেবগন। ১২ মার্চে মুম্বাইয়ের ১২ জায়গায় এই সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের সাথে জড়িত সন্দেহে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেন মুম্বাই পুলিশের অফিসার কবির শাহ্ (জাভেদ জাফরি)। এই হামলার মাধ্যমে মুম্বাইয়ের মানুষ এবং পুলিশ প্রথমবারের মতো পরিচিত হয় আরডিএক্স-এর মতো ভয়ানক বিস্ফোরক দ্রব্যের সাথে। কিন্তু এই হামলার পিছনে কাজ করা মাষ্টার মাইন্ড বিলাল আহমেদ এবং টাইগার ভারত থেকে পালিয়ে যেতে সফল হয়। এরচেয়েও ভয়ংকর খবর হচ্ছে, গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী মোট ১০০০ কেজি আরডিএক্স ভারতে আনা হলেও এই হামলায় মাত্র ৪০০ কেজি আরডিএক্স ব্যবহৃত হয়েছে। বাকী ৬০০ কেজি আরডিএক্স ভারতের কোন এক জায়গায় লুকিয়ে রেখেছে সন্ত্রাসীরা।

ভারত থেকে পালিয়ে বিলাল আহমেদ (কোমুদ মিস্রা) চলে যায় লন্ডনে ওমর হাফিজের কাছে। ওমর হাফিজ (জ্যাকি শ্রফ) আইএসআই এর হয়ে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী হামলা পরিচালনা করে থাকে। ১৯৯৩ সালে সংঘঠিত সেই বোমা হামলার ট্রেনিং দিয়েছিলেন ওমর হাফিজ। বাকী ৬০০ কেজি আরডিএক্স ভারতে কোথায় আছে সেটা একমাত্র বিলাল আহমদই জানে। এরপর ১৯৯৯ সালে আইএসআই’র সাহায্যে ওমর হাফিজ সন্ত্রাসী সংঘঠন ‘লস্কর’ এর যাত্রা শুরু করে। ওমর জাফর মোজাফরাবাদ থেকে ‘লস্কর’ এর মাধ্যমে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করতে থাকে। ‘লস্কর’কে পরবর্তিতে আইএসআই কার্গিল যুদ্ধে ব্যবহার করে যেখানে ওমর হাফিজের বড় ছেলে ভারতীয় বাহিনীর হাতে মারা যায়। এই ঘটনার পর ওমর জাফরের অন্য দুই ছেলেও লন্ডন থেকে মোজাফরাবাদে ফেরত আসে। পরবর্তি হামলার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৪০ জন পাকিস্থানিকে ভারতীয় পরিচয়ে সেখানো পাঠানো হয় আর তাদেরকে পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয় ওমর জাফরের দ্বিতীয় ছেলে রিয়াজকে (অভিমন্যু সিং)।

এরপর সিনেমার গল্প চলে আসে বর্তমানে। মুম্বাইয়ের এন্টি-টেরোরিস্ট স্কোয়াড জানতে পারে ভারতে ৪০ জন পাকিস্থানি স্লিপার সেলকে পরিচালনাকারী রিয়াজ হাফিজ রাজবীর রাঠোর নামে অবস্থান করছে। তাকে গ্রাফতারের লক্ষ্যে অপারেশনে যায় এন্টি-টেরোরিস্ট স্কোয়াডের একটি দল, যা নেতৃত্বে ছিলেন বীর সুরিয়াবংশী (অক্ষয় কুমার)। সিনেমাটির পরের গল্পটা পুরোপুরি বীর সুরিয়াবংশী এবং রিয়াজ হাফিজ এবং ভারতে অবস্থানকারী তার দলের মধ্যকার লড়াইয়ের। এদিকে একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে বীর সুরিয়াবংশীর স্ত্রী রিয়া (ক্যাটরিনা কাইফ) সুরিয়াবংশীর কাছ থেকে আলাদা থাকে এবং নিজের ছেলেকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। সুরিয়াবংশী অনেক চেষ্টা করেও রিয়াকে তার সিদ্ধান্ত থেকে ফেরাতে পারেনা।

পারিবারিক কারনে মানসিকভাবে অশান্তিতে থাকা সুরিয়াবংশী কি পারবে ১৭ বছর ধরে লুকিয়ে থাকা ৬০০ কেজি আরডিএক্স-এর? ‘লস্কর’ প্রধান ওমর হাফিজ এবং বেলাল আহমেদের পরবর্তি পরিকল্পনা কি মোকাবেলা করতে পারবে সুরিয়াবংশী? ১৯৯৩ সালের সেই সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের সাথে কি সুরিয়াবংশীর কোন সম্পর্ক রয়েছে? রিয়াজ হাজিফকে জেল থেকে বের করতে কি ভয়ংকর পরিকল্পনা করছে বেলাল আহমেদ? ৪০ জন স্লিপার সেল কবে কর্যকর হবে আর মুম্বাইয়ের বিরুদ্ধে কি নীল নকশা আঁকছে লস্কর? ওমর হাফিজ কি ধরা দিবে সুরিয়াবংশীর কাছে? সিঙ্গাম এবং সিম্বা কি পারবে সুরিয়াবংশীকে তার মিশন সফলে সাহায্য করতে? সিনেমাটির বাকী অংশ এই প্রশ্নের উত্তর দিবে আপনাকে। একটা কথা জানিয়ে রাখছি, সিনেমাতির ক্লাইম্যাক্সে একটি জিনিশ নিশ্চিত করেছেন রোহিত শেঠি, তা হলো ‘সিঙ্গাম ৩’। ‘সুরিয়াবংশী’ সিনেমার গল্প যেখানে শেষ হয়েছে ঠিক সেখান থেকেই শুরু হবে অজয় দেবগণকে নিয়ে রোহিত শেঠির ‘সিঙ্গাম’ সিনেমার তৃতীয় পর্ব।

গল্প, চিত্রনাট্য এবং সংলাপঃ ‘সুরিয়াবংশী’ সিনেমাটির গল্প লিখেছেন নির্মাতা রোহিত শেঠি নিজেই। সিনেমাটির গল্পে ভারতে সন্ত্রাসবাদ এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সহ আইএসআই এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংঘটন লস্করের বেশ কয়েকটি দিক তুলে এনেছেন এই নির্মাতা। ১৯৯৩ সালের ১২ই মার্চের মুম্বাইয়ে সিরিজ বোমা হামলার প্রেক্ষাপটে সিনেমাটির বাকী অংশ সাজিয়েছেন তিনি নিজের মত করে। এছাড়া পুলিশ ইউনিভার্সের অংশ হিসেবে নির্মিত হওয়ার কারনে, বাকী দুই পুলিশ চরিত্রকে (সিঙ্গাম এবং সিম্বা) গল্পের মাঝে ঠিকমত সাজানোর কাজটি রোহিত শেঠি করেছেন অসাধারণ দক্ষতায়। এছাড়া সিনেমাটির প্রধান খলনায়কের চরিত্রগুলোকে একটির সাথে অন্যটিকে তিনি যুক্ত করেছেন দক্ষতার সাথে। সিনেমাটির গল্পের সবচেয়ে ভালো দিকে হচ্ছে এই গল্পের ধারাবাহিকতা। সিনেমায় ওমর হাফিজের গল্প শেষ হয়নি এবং ক্লাইম্যক্সে যে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে তাতে এটা নিশ্চিত ওমর হাফিজকে প্রতিহত করতে এবার মাঠে নামবেন সিঙ্গাম। এই কথার মানে আপনাদের বুঝতে না পারার কথা না!

এবার আসি চিত্রনাট্যে, গল্পটা নিজের হলেও সিনেমাটির চিত্রনাট্যের কাজটি রোহিত তুলে দিয়েছেন ইউনুস সাজওয়ালের হাতে। আর রোহিতের সেই ভরসার শতভাগ সম্মান রেখেছেন ইউনুস। এরকম একটি টান টান উত্তেজনার গল্পের জন্য যেরকম সুলিখিত চিত্রনাট্য দরকার ছিলো ইউনুস সেটাই দিতে পেরেছেন। লস্করের গোপন বৈঠক, অক্ষয়ের পারিবারিক আবেগ কিংবা অক্ষয়ের বাইক এবং হেলিকাপ্টার স্টান্ট সিনেমাটির প্রতিটি দৃশ্যকে নিজের চিত্রনাট্য দিয়ে করেছেন আরো বেশী উপভোগ্য। এছাড়া সিনেমাটির তিন তারকাদের এন্ট্রি দৃশ্যগুলো ছিলো অসাধারণ, বিশেষ করে সিঙ্গাম রূপে অজয় দেবগনের পর্দায় আসার দৃশ্যটি জনপ্রিয় এই চরিত্রের প্রতি ছিলো অনেক বড় একটি ট্রিবিউট। সাম্প্রদায়িকতার মতো সংবেদনশীল একটি বিষয়কে ইউসুফ সিনেমার পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন বেশ সুনিপুনভাবে।

গল্প এবং চিত্রনাট্যের পাশাপাশি ‘সুরিয়াবংশী’ সিনেমার অন্যতম শক্তিশালী লিখনি ছিলো এর সংলাপ। বেশ কিছু সংলাপ দর্শকদের অনেকদিন মনে থাকবে। যেমন, ‘মুম্বাই পুলিশ পাসপোর্টের ধর্ম না, সন্ত্রাসীর রেকর্ড দেখে গুলি করে’। এছাড়া সিনেমাটির আরো কয়েকটি দৃশ্যে শক্তিশালী আরো কিছু সংলাপ আছে যা অবশ্যই প্রশংসার দাবী রাখে।

পরিচালনাঃ বাণিজ্যিক ধারার সিনেমার জন্য পরিচালক হিসেবে রোহিত শেঠি সময়ের অন্যতম সেরা। আর বিশেষ করে পুলিশ থ্রিলার গল্পের সিনেমায় তার সমকক্ষ্য নেই বললেই চলে। কমেডি সিরিজ ‘গোলমাল’ থেকে শুরু করে পুলিশ ইউনিভার্সের মোটি তিনটি সিনেমার প্রতিটিতে রোহিত প্রমান করেছেন তার গল্প বলার ধরনের গ্রহণযোগ্যতা। ‘সুরিয়াবংশী’ সিনেমাটি এর ধারাবাহিকতা নয়, বরং এখন পর্যন্ত এই নির্মাতার সেরা সিনেমা। অক্ষয় কুমার এবং রোহিত শেঠির কম্বিনেশনের কাছে যে প্রত্যাশা ছিলো তার সর্বোচ্চ প্রতিদান দিয়েছেন রোহিত শেঠি। আগের সিনেমাগুলোর মতো এই সিনেমারও প্রতিটি দৃশ্য রোহিত ধারন করেছেন বিশাল আয়োজনে। কার এবং বাইকের পাশাপাশি ছিলো অক্ষয় কুমারের দুর্দান্ত হেলিকাপ্টার স্টান্ট। প্রতিটি দৃশ্যকে উপভোগ্য করতে নিজের সর্বোচ্চটা দিয়েছেন রোহিত শেঠি। এছাড়া অ্যাকশন গল্পের একটি সিনেমায় মাঝে মাঝে কিছু কমেডি দৃশ্য দিয়ে দর্শকদের বিরক্ত হওয়ার কোন সুযোগই দেননি তিনি।

অভিনয়ঃ সিনেমাটির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অক্ষয় কুমার। অক্ষয় কুমারের অভিনয় বরাবরের মতই ভালো ছিলো। অ্যাকশন নির্ভর সিনেমায় অক্ষয় কুমার সবসময়ই ভালো অভিনয় করে থাকেন। তবে ‘সুরিয়াবংশী’ সিনেমায় অক্ষয়ের চরিত্রের গভিরতা শুধু অ্যাকশনে সীমাবদ্ধ ছিলো না। রোমান্স তুলনামুলকভাবে কম থাকলে পারিবারিক সেন্টিমেন্টকে সুন্দরভাবে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন এই অভিনেতা। সিনেমায় অক্ষয়ের বিপরীতে অভিনয় করেছেন ক্যাটরিনা কাইফ। যদিও এই সিনেমায় ক্যাটরিনার চরিত্র তেমন বড় ছিলোনা কিন্তু তার চরিত্রে তিনি ভালো অভিনয় করেছেন। আর ক্যাটরিনার কথা বললে ‘টিপ টিপ বারসা’ গানে তার নাচ আলাদাভাবে প্রশংসার দাবী রাখে।

এন্টি-টেরোরিস্ট স্কোয়াডের প্রধান চরিত্রে জাবেদ জাফরি ভালো অভিনয় করেছেন। একটি দায়িত্বশীল পদে তিনি ছিলেন বেশ মাননসই। ‘সুরিয়াবংশী’ সিনেমায় খলনায়ক চরিত্রে বেশ কয়েকজন অভিনেতা অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম প্রধান খল নায়ক চরিত্রে গুলশান গ্রোভার দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। তার চেহারার অভিব্যাক্তি এবং সংলাপ বলার ধরন সিনেমাটিতে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে নিক্তিন ধীর, অভিমন্যু সিং এবং কোমুদ মিস্রা ভালো অভিনয় করেছেন। বিশেষ করে অভিমন্যু সিং এবং কোমুদ মিস্রা বরাবরের মতোই নিজেদের চরিত্রকে দিয়েছেন ভিন্ন মাত্রা।

জ্যাকি শ্রফকে এই সিনেমায় লস্করের প্রধান হিসেবে দেখানো হয়েছে। আর মুম্বাইকে ধ্বংস করার নীল নকশার মূল হোতা ওমর জাফর চরিত্রে মাঝে মাঝে পর্দায় দেখা গেছে তাকে। তবে যে কয়েকবার তিনি পর্দায় এসেছেন এই চরিত্রে তার প্রভাব তিনি রেখেছেন। সালমান খান অভিনীত ‘রাধে’ সিনেমায় ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করে নিজের নামের প্রতি যে অবিচার জ্যাকি শ্রফ করেছিলেন ‘সিঙ্গাম ৩’ সিনেমায় এই চরিত্রের ধারাবাহিকতায় তা ঘোচিয়ে দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সিনেমাটির অন্য দুইটি চরিত্রে রনবীর সিং এবং অজয় দেবগণও স্বভাবসুলভ ভালো অভিনয় করেছেন। যদিও অজয়ের চেয়ে রনবীরের চরিত্রের ব্যাপ্তি বেশী ছিলো ক্লাইম্যাক্সে এসে শেষ পর্যন্ত অজয়ই হয়ে উঠেন প্রধান। ওমর জাফরের সাথে তার ফোনালাপ দিয়ে দর্শকদের মানসিকভাবে তৈরি করা হয়েছে অজয়ের ‘সিঙ্গাম ৩’ সিনেমার জন্য।

চিত্রগ্রহন এবং সম্পাদনাঃ সিনেমাটির চিত্রগ্রহণ এবং সম্পাদনা ছিলো গল্প এবং চিত্রনাট্যের মতই দুর্দান্ত। বিশেষ করে সম্পাদনার ক্ষেত্রে বান্টি নাগি তার মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। অক্ষয়ের ব্যাক্তিগত জীবনের গল্পগুলোকে সিনেমার বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে সময়োপযোগীভাবে তুলে আনতে সক্ষম হিয়েছেন তিনি। এই সিনেমার সম্পাদনায় বান্টি নাগির সবচেয়ে সফলতা সম্ভবত দর্শকের সাথে গল্পের খন্ডচিত্রগুলোর সংযোগ স্থাপন। সিনেমাটি দেখার সময় দর্শকের একবারও মনে হবেনা যে, এই দৃশ্যটি না থাকলেও হত বা এই দৃশ্যটি আরো ছোট হলেও পারতো। সিনেমাটির চিত্রগ্রহণও বেশ ভালোভাবে করেছেন জোমন টি. জন। অক্ষয়ের স্টান্টগুলোকে বেশ দক্ষতার সাথে ধারন করেছেন তিনি।

উপসংহারঃ বাণিজ্যিক সিনেমা হিসেবে ‘সুরিয়াবংশী’ সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম সেরা সিনেমা। টান টান উত্তেজনার গল্প এবং চিত্রনাট্যের সাথে রোহিত শেঠির নিজস্ব স্টাইলের নির্মানে সিনেমাটি তৈরি হয়েছে বিনোদনের সবগুলো উপাদান দিয়ে। সামগ্রিকভাবে তারকা, স্কেল, অ্যাকশন এবং বিনোদন – সবকিছুই আছে ‘সুরিয়াবংশী’ সিনেমায়। রোহিত শেঠি এই দিওয়ালীতে একটি ব্লকবাস্টার প্যাকেজ উপস্থাপন করেছেন যা দর্শকদের প্রচুর সংখ্যায় প্রেক্ষাগৃহে ফিরিয়ে আনবে। SURE-SHOT SMASH HIT!

আরো পড়ুনঃ
বেলবটম রিভিউ
‘সুরিয়াবংশী’র শেষ থেকে শুরু হচ্ছে ‘সিঙ্গাম ৩’: ক্লাইম্যাক্সে ইঙ্গিত নির্মাতার!

By হোসেন মৌলুদ তেজো

এ সম্পর্কিত

%d