ফ্র্যাঞ্চাইজির সর্বোচ্চ উদ্বোধনী পাচ্ছে কিয়ানু রিভসের ‘জন উইকঃ চ্যাপ্টার ৪’

ফ্র্যাঞ্চাইজির সর্বোচ্চ উদ্বোধনী

ক্যারিয়ারের অন্যতম আলোচিত ‘জন উইক’ নিয়ে আবারো বড় পর্দায় হাজির হয়েছেন কিয়ানু রিভস। গত ২৪শে জানুয়ারি মুক্তি পেয়েছে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির চতুর্থ সিনেমা ‘জন উইকঃ চ্যাপ্টার ৪’। মুক্তির আগে বিশেষ প্রদর্শনীতে দারুণভাবে প্রশংসিত সিনেমাটি বক্স অফিসেও ভালো শুরু করেছে বলে জানা গেছে। হলিউডের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম ভেরাইটি এমনটাই জানিয়েছে তাদের একটি প্রতিবেদনে। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রিভিউতে ৮.৯ মিলিয়ন ডলারের পর ফ্র্যাঞ্চাইজির সর্বোচ্চ উদ্বোধনী পাচ্ছে কিয়ানু রিভসের ‘জন উইকঃ চ্যাপ্টার ৪’ সিনেমাটি।

এর আগে ফ্র্যাঞ্চাইজির সর্বোচ্চ উদ্বোধনী পাওয়া সিনেমা ছিলো ‘জন উইকঃ চ্যাপ্টার ৩ – প্যারাবেলাম’। এবার আগের পর্বের রেকর্ড ভেঙ্গে ফ্র্যাঞ্চাইজির সর্বোচ্চ উদ্বোধনী পাওয়া সিনেমা হতে যাচ্ছে কিয়ানু রিভসের ‘জন উইকঃ চ্যাপ্টার ৪’। প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী, জনপ্রিয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজির চতুর্থ পর্বটির উদ্বোধনী সপ্তাহান্তের আয়ের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। মুক্তির প্রথম দিনে ৩,৮৫৫ টি প্রেক্ষাগৃহ থেকে সিনেমাটির আয়ের পরিমাণ ছিলো ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

মজার ব্যাপার হচ্ছে ‘জন উইক’ ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রতিটি সিনেমার উদ্বোধনী এর আগের পর্বের চেয়ে বেশী ছিলো। ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাটির প্রথম পর্বের উদ্বোধনী সপ্তাহান্তের আয় ছিলো ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরপর ২০১৭ এবং ২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাটির দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্বের উদ্বোধনী সপ্তাহান্তের আয়ের পরিমাণ ছিলো যথাক্রমে ৩০.৪ এবং ৫৬.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া মুক্তির আগের দিনের প্রিভিউ থেকে আয়েও ছিলো একই ট্রেন্ড। সিনেমাটির আগের তিন পর্বের প্রিভিউ থেকে আয়ের পরিমাণ ছিলো যথাক্রমে ৯.৫ লাখ, ২.২ মিলিয়ন এবং ৫.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এদিকে জানা গেছে ‘জন উইকঃ চ্যাপ্টার ৪’ এই ফ্র্যাঞ্চাইজির সর্বোচ্চ বাজেটের সিনেমা। সিনেমাটির নির্মান ব্যায় প্রায় ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে সিনেমাটির উদ্বোধনী বক্স অফিস থেকে অনুমান করা যাচ্ছে যে, ফ্র্যাঞ্চাইজির সর্বোচ্চ আয়ের সিনেমা হতে যাচ্ছে এটি। এর আগে ৩২৮.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের মাধ্যমে প্রথম অবস্থানে রয়েছে ‘জন উইকঃ চ্যাপ্টার ৩ – প্যারাবেলাম’। আর এর দ্বিতীয় এবং প্রথম পর্বের বক্স অফিসে মোট আয়ের পরিমাণ ছিলো যথাক্রমে ১৭৪.৩ মিলিয়ন এবং ৮৬.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বরাবরের মতই ‘জন উইক’ সিনেমার চতুর্থ পর্বের অ্যাকশন দারুণভাবে প্রশংসিত হয়েছে দর্শক এবং সমালোচকদের কাছে। একটি নৃশংস এবং আড়ম্বরপূর্ণ অ্যাকশন মহাকাব্য হিসেবে সিনেমাটিকে আখ্যায়িত করছেন অনেকে। আর এতে কিয়ানু রিভস নিজের অভিনয়ের মাধ্যমে নিজেকে আবারো ছাড়িয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করছেন বিশেষ প্রদর্শনীতে উপস্থিত দর্শক এবং সমালোচকরা। দুর্দান্ত অ্যাকশন দৃশ্যের মাধ্যমে দর্শক কখনো বিরক্ত হবেন না বলেও মন্তব্য করছেন সবাই।

সিনেমাটির প্রতিটি অ্যাকশনে কিয়ানু রিভস অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছেন বলে মতামত দিয়েছেন অনেকে। কিয়ানু রিভস অভিনীত ‘জন উইক’ চতুর্থ পর্বের অন্যতম প্রধান আকর্ষন হিসেবে হাজির হয়েছেন অ্যাকশন তারকা ডনি ইয়েন। প্রায় তিন ঘন্টা দৈর্ঘ হওয়া স্বত্বেও সিনেমাটির প্রতিটি মুহুর্ত উপভোগ্য বলে জানিয়েছেন দর্শকদের অনেকে। কিয়ানু রিভস এবং ডনি ইয়েন এর মধ্যকার অ্যাকশন দৃশ্যগুলো সিনেমাটিকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে হলিউডের কয়েকজন চলচ্চিত্র সমালোচক।

জন উইক: চ্যাপ্টার ৪’ সিনেমাটি কিয়ানু রিভসকে তার সবচেয়ে মারাত্মক যুদ্ধের জন্য আইকনিক স্যুট-পরিহিত ঘাতক হিসাবে ফিরিয়ে আনে। এবার, জন কারো প্রতিশোধ নিতে নয় বরং তার নিজের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করবে। কিন্তু এবার তার যুদ্ধটা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী হতে যাচ্ছে, কারণ মনে হচ্ছে অবশেষে সে তার সমকক্ষ কাউকে খোঁজে পেয়েছে। সফল ‘জন উইক’ ফ্র্যাঞ্চাইজির সর্বশেষ কিস্তিতে এবার লড়াই হবে জন বিপজ্জনক খুনি ডনি ইয়েনের মধ্যে। ট্রেলারে সেই জমজমাট লড়াইয়ের খন্ডচিত্রও দেখা গেছে।

গল্প এবং বিষয়বস্তু নিয়ে সিনেমাটির অফিসিয়াল সারসংক্ষেপে লেখা হয়েছে, ‘জন উইক (কিয়েনু রিভস) হাই টেবিলকে পরাজিত করার একটি পথ উন্মোচন করেছেন। কিন্তু তার স্বাধীনতা অর্জন করার আগে, উইককে বিশ্বজুড়ে শক্তিশালী জোট এবং পুরানো বন্ধুদের শত্রুতে পরিণত করে এমন শক্তির সাথে একটি নতুন শত্রুর মুখোমুখি হতে হবে।‘ কিয়ানু এবং ইয়ান ছাড়াও, লরেন্স ফিশবার্ন এবং ল্যান্স রেডডিকও যথাক্রমে দ্য বাউরি কিং এবং চারন হিসাবে ফিরে আসবেন।

‘জন উইকঃ চ্যাপ্টার ৩ – প্যারাবেলাম’ সিনেমার মাধ্যমে ফ্র্যাঞ্চাইজির পৌরাণিক কাহিনীকে ব্যাপক উপায়ে প্রসারিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন নির্মাতারা। এবার চতুর্থ সিক্যুয়েলটি সেটিকে আরো বড় পড়িসরে চালিয়ে যেতে চলেছে বলেই মনে হচ্ছে। বিল স্কারসগার্ডের মারকুইট ‘জন উইক ৪’ সিনেমায় দর্শককে হাই টেবিল এবং গুপ্তঘাতক আন্ডারওয়ার্ল্ডের জটিল শ্রেণিবিন্যাস সম্পর্কে আরো বেশী তথ্য দেয়। তিনি জন উইকের চাবিকাঠি হিসাবে একের পর এক লড়াইয়ের মাধ্যমে অবশেষে স্বাধীনতা লাভ করেন।

আরো পড়ুনঃ
বিশেষ প্রদর্শনীতে প্রশংসিত কিয়ানু রিভস অভিনীত ‘জন উইক’ চতুর্থ পর্ব
‘অ্যাভাটার’ চতুর্থ পর্বে প্যান্ডোরা থেকে পৃথিবীতে ফিরছেন নাভি
‘অ্যাভেঞ্জার্সঃ এন্ডগেম’ স্মৃতি ফিরে আসছে ‘ফাস্ট এক্স’ সিনেমার গল্পে

By নিউজ ডেস্ক

এ সম্পর্কিত

%d