প্রথম সপ্তাহ শেষে বক্স অফিসে ভালো অবস্থানে জেমস ক্যামেরনের ‘অ্যাভাটার ২’

জেমস ক্যামেরনের ‘অ্যাভাটার ২’

গত ১৬ই ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেয়েছে চলতি বছরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’। প্রথম পর্বের ঐতিহাসিক সাফল্যের পর এই ফ্র্যাঞ্চাইজির দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে দর্শকদের প্রত্যাশা ছিলো আকাশচুম্বী। এছাড়া লন্ডনে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারে দর্শক এবং সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে জেমস ক্যামেরন পরিচালিত এই সিনেমা। মুক্তির পর বক্স অফিস আয়েও দেখা গেলো এর প্রতিফলন। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রথম সপ্তাহ শেষে বক্স অফিসে ভালো অবস্থানে জেমস ক্যামেরনের ‘অ্যাভাটার ২’ সিনেমাটি।

হলিউডের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম ডেডলাইনের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে মুক্তির প্রথম সপ্তাহে জেমস ক্যামেরনের ‘অ্যাভাটার ২’ সিনেমাটি আয় করেছে ৬০৯.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বব্যাপী এই আয়ে চায়না বক্স অফিস থেকে ৭০.৫ মিলিয়ন ডলার অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। ক্রিসমাসের উৎসবকে সামনে রেখে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাটির সামনে আপাতত বড় কোন সিনেমার বাধা নেই। তাই ধারণা করা হচ্ছে নিজের করা পূর্বের রেকর্ড ভেঙ্গে ইতিহাসের সর্বোচ্চ আয়ের সিনেমার নির্মাতা হতে যাচ্ছেন জেমস ক্যামেরন।

যদিও প্রথম সপ্তাহ শেষে বক্স অফিসে ভালো অবস্থানে রয়েছে জেমস ক্যামেরনের ‘অ্যাভাটার ২’, এটি প্রত্যাশার চেয়ে কম। আমেরিকার বক্স অফিসে সিনেমাটি ১৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে। কিন্তু ডিজনি এবং হলিউড ট্রেড বিশেষজ্ঞদের প্রত্যাশা আরো বেশী ছিলো। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে বিশেষকরে দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স এবং ভারতে সিনেমাটি প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশী আয় করতে সক্ষম হয়েছে। প্রথম সপ্তাহ শেষে সিনেমাটি আন্তর্জাতিক বাজারে আয় করেছে মোট ৪২৬.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

মুক্তি এক সপ্তাহে বক্স অফিসে সিনেমাটি ইতিমধ্যে অর্ধ বিলিয়ন আয় অতিক্রম করেছে জেমস ক্যামেরনের ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’ সিনেমাটি। এদিকে বড় বাজেটে নির্মিত হওয়ার কারনে বক্স অফিসে সিনেমাটি বিনিয়োগ তুলতে কমপক্ষে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করতে হবে বলে জানিয়েছেন নির্মাতা জেমস ক্যামেরন। প্রথম সপ্তাহে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের মাধ্যমে বক্স অফিসে সেই প্রত্যাশাকে বাঁচিয়ে রাখলো সিনেমাটি। প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, দুই সপ্তাহের মধ্যেই সিনেমাটি বক্স অফিসে ১ বিলিয়ন অতিক্রম করতে যাচ্ছে।

এর আগে মুক্তির উদ্বোধনী সপ্তাহান্তে উত্তর আমেরিকা বক্স অফিসে সিনেমাটি আয় করেছিলো ১৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর আন্তর্জাতিক বক্স অফিসে এই আয় ছিলো ৩০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সব মিলিয়ে প্রথম সপ্তাহান্তে বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে সিনেমাটির আয়ের পরিমাণ ছিলো ৪৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তুলনামূলক ভাবে অভ্যন্তরীণ বক্স অফিসে তুলনায় আন্তর্জাতিক বক্স অফিসে সিনেমাটি ভালো ব্যবসা করতে সক্ষম হয়েছে। কারণ সিনেমাটির মোট আয়ের ৭০% এসেছে আন্তর্জাতিক বক্স অফিস থেকে।

উল্লেখ্য যে, ‘অ্যাভাটার’ সিরিজের প্রথম পর্বটি মুক্তির প্রথম সপ্তাহান্তে বক্স অফিসে ২৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছিলো। এরপর বক্স অফিসে সর্বকালের সর্বোচ্চ আয়ের সিনেমা হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে ‘অ্যাভাটার’। মহামারী পরবর্তি সময়ে আয়ের হিসেবে এই তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রথম সপ্তাহান্ত। এর আগে ‘ডক্টর স্ট্রেঞ্জ ইন দ্য মাল্টিভার্স অফ ম্যাডনেস’ সিনেমাটি ৪৪২ মিলিয়ন এবং ‘স্পাইডার-ম্যান: নো ওয়ে হোম’ ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করতে সক্ষম হয়েছিলো।

পুরষ্কার জয়ী ‘অ্যাভাটার’ ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিলো ২০০৯ সালে। প্রথম পর্বের পর এই ফ্র্যাঞ্চাইজির দ্বিতীয় পর্বের জন্য দর্শকদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৩ বছর। আর এই সময়ে সবকিছু বদলে গেছে ব্যাপকভাবে। যদিও আরো তিনটি সিক্যুয়েল জুড়ে বলার মতো একটি গল্প রয়েছে, যদি ফ্র্যাঞ্চাইজির নতুন সিনেমাটি দর্শকদের মাঝে আগ্রহের জন্ম না দেয় তবে সেখানে ছাঁটাই করা যেতে পারে। সে বিবেচনায় ‘অ্যাভাটার ৩’ হতে পারে ফ্র্যাঞ্চাইজির শেষ সিনেমা!

প্রসঙ্গত, পরিচালনার পাশাপাশি জোশ ফ্রিডম্যানের সাথে যৌথভাবে সিনেমাটির চিত্রনাট্য রচনা করেছেন জেমস ক্যামেরন। আর ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’ সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন জো সালডানা, স্যাম ওয়ার্থিংটন, সিগর্নি ওয়েভার, স্টিফেন ল্যাং, ক্লিফ কার্টিস, জোয়েল ডেভিড মুর, সিসিএইচ পাউন্ডার, এডি ফ্যালকো, জেমাইন ক্লেমেন্ট এবং কেট উইন্সলেট। সর্বপরি প্রথম সপ্তাহ শেষে ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’ সিনেমাটি বক্স অফিসে নতুন রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরো পড়ুনঃ
‘অ্যাভাটার ২’ বক্স অফিস: প্রথম সপ্তাহান্তে বিশ্বব্যাপী ৪০০ মিলিয়নের বেশী
বিশাল বাজেটের কারনে বাণিজ্যিক সাফল্যের চাপে ‘দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’
বিশেষ প্রদর্শনীতে প্রশংসায় ভাসছে ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’

By নিউজ ডেস্ক

এ সম্পর্কিত

%d