দর্শকদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পুরষ্কার পাওয়ার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ : মঞ্জু ওয়ারিয়র

মঞ্জু ওয়ারিয়র

২০২১ সালটা মঞ্জু ওয়ারিয়রের জন্য ইতিমধ্যে অন্যতম অর্জনের বছর হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে। ‘মারাক্কার’ শ্রেষ্ঠ সিনেমা হিসেবে জাতীয় পুরষ্কার অর্জনের পর ‘অসুরান’ সেরা তামিল সিনেমা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্যা প্রিয়েস্ট’ এবং ‘চতুরমুখম’ সিনেমা দুইটি ভালো ব্যবসা করেছে। নিজের সিনেমা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সম্প্রতি এই তারকা কথা বলছেন সিনেমা এক্সপ্রেস এর সাথে। সেই আলাপচারিতার চুম্বক অংশ ফিল্মীমাইক পাঠকদের জন্য ধরা হলো।

‘দ্যা প্রিয়েস্ট’ এবং ‘চতুরমুখম’ প্রেক্ষাগৃহে ভালো ব্যবসা করছে। আমি শুনেছি আপনি ‘চতুরমুখম’ এর শুটিং করেছেন। এই সিনেমাতে কাজের অভিজ্ঞতাকি আপনাকে আরো একটি হরর সিনেমা করতে উৎসাহী করেছিল?

না, একসাথে দুইটি হরর সিনেমায় কাজ করা এবং দুইটি সিনেমা ই একমাসের ব্যবধানে মুক্তি পাওয়া কাকতালীয় ছিলো। ‘চতুরমুখম’ সিনেমাটি গত বছর মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও মহামারীর কারনে পিছিয়ে যায়। এরপর ঘটনাক্রমে ‘দ্যা প্রিয়েস্ট’ সিনেমার হয় এবং মুক্তি পায়। যদিও দুইটি সিনেমাই একই জেনোরের, দুইটি সিনেমার গল্প এবং চরিত্র আলাদা। আমার মনে হয় কারনে দুইটি সিনেমাই সফল হয়েছে। প্রত্যেক সিনেমার লক্ষ্য থাকে দর্শকদের ভালো অভিজ্ঞতা দেয়া এবং বিশ্বাস করি সিনেমা দুটি সেই লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

আমি শুনেছি আপনি ‘দ্যা প্রিয়েস্ট’ এর ক্লাইমেক্স আগে সম্পন্ন করেছেন। ‘চতুরমুখম’ এর ক্ষেত্রে কি যেভাবে লিখা হয়েছে সেই ধারাবাহিকতায় শুটিং করেছিলেন?

একদম ঠিক বলা যাবে না। আমার সিনেমাগুলোর মত, এই সিনেমাও কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু ‘দ্যা প্রিয়েস্ট’ সিনেমার ক্লাইমেক্স আমি আগে শেষ করেছি। এটা আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা ছিলো এবং বেশ চ্যালেন্জিংও ছিলো। সঠিক আবেগকে তুলে ধরা এবং চরিত্রকে ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে লেখক এবং পরিচালকের সাথে একাধিকবার আলোচনা করতে হয়েছে আমাকে।

মঞ্জু ওয়ারিয়র

দুইটি সিনেমাতেই ভিএফএক্স এবং সাউন্ড ইফ্যাক্ট গুরুত্বপূর্ন ছিলো?

আমাদের সিনেমার দর্শকরা আন্তর্জাতিক সিনেমার সাথে খুবই পরিচিত হওয়ার কারনে ভালো এবং খারাপ ভিজ্যুয়াল ইফেক্টের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে আমাদের খুব সতর্কতার সাথে হয়েছে। প্রতীকে ক্রু মেম্বার তাদের সেরাটা চেষ্ঠা করেছেন।

‘চতুরমুখম’ সিনেমায় হরর সিনেমার নতুন কিছু দিক তুলে ধরা হয়েছে মালায়লাম সিনেমায় এর আগে দেখা যায়নি। সেক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো দর্শক কিভাবে গ্রহন করবে তা নিয়ে কি আপনি চিন্তিত ছিলেন?

একদমই না। প্রথমবারের মত হরর সিনেমায় অভিনয় করতে পারাটা এমনিতেই উচ্ছাসের ছিলো। আর সিনেমা দুটির পরিচালক (রণজিৎ কামালা শংকর এবং সলিল ভি) এবং তাদের লেখকদের (অভয়কুমার এবং অনিল কুরিনা) গতানুগতিক ধারার বাইরে আলাদা গল্পের হরর সিনেমা আমার আনন্দকে বাড়িয়ে দিয়েছে আরো বহুগুন।

এই বিষয়গুলোকি আপনাকে সিনেমাটির সহ-প্রযোজক হতে উৎসাহিত করেছে?

‘চতুরমুখম’ সিনেমাটি যখন শেষ পর্যায়ে তখন আমি এই সিদ্ধান্ত নেই। এছাড়া সিনেমাটি সাফল্যের ব্যাপারে আমি আত্নবিশ্বাসী ছিলাম।

‘চতুরমুখম’ সিনেমায় আপনার চরিত্রটি সোশ্যাল মিডিয়া আসক্ত। এক্ষেত্রে আপনার কি অবস্থান?

আমি সাধারনত এটা ব্যবহার করিনা, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাজের প্রয়োজনে করি। হ্যাঁ, বিভিন্ন সময় মাঝেমাঝে শুধু স্ক্রল করে দেখি এবং কিছু মন্তব্যের উত্তর দেই। বেশি কিছুনা।

সাম্প্রতিক সময়ে আপনি বেশ কয়েকজন অভিষিক্ত পরিচালকের সিনেমায় কাজ করেছেন। নতুনদের গল্পের উপস্থাপনে আপনার কাছে বেশী সম্ভাবনাময়ী মনে হয়েছে?

নতুনদের বেশি সুযোগ দিচ্ছি এটা আমি বলছি না। ব্যাপারটা এমন যে, তাদের সাথে কথা বলার পর আপনি তাদের ভিতরের সম্ভাবনার একটা ধারনা পাবেন আপনাকে তাদের সাথে কাজ করার ব্যাপারে আরো আত্নবিশ্বাসী করবে।

আপনি আপনার ভাইয়ের পরিচালিত প্রথম সিনেমা ‘লালিথাম সুন্দরাম’য় অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজক হিসেবেও আছেন। আপনার কাছ থেকে সম্মতি পেতে কি তাকে অনেক কষ্ঠ করতে হয়েছে?

‘লালিথাম সুন্দরাম’ ছাড়াও আরো চিত্রনাট্য নিয়ে অনেকদিন থেকে কাজ করছিলো, কিন্তু বিভিন্ন কারনে শেষ পর্যন্ত সেটা উঠেনি। আর ‘লালিথাম সুন্দরাম’ নিয়ে গত দুই বছর ধরে কাজ হচ্ছে। ‘চতুরমুখম’ সিনেমাটিও ওই সময়ে প্রস্তুতির পর্যায়ে ছিলো।

মঞ্জু ওয়ারিয়র

‘আসুরান’ সিনেমায় আপনার অভিনয় দেখার পর অনেকেই বলেছিলেন তামিল সিনেমায় আরো আপনি কেন আসেননি। তামিল থেকে কি এখন প্রচুর প্রস্তাব পাচ্ছেন আপনি?

হ্যাঁ। কিন্তু ‘আসুরান’ করার কারনে আমার পরবর্তী তামিল সিনেমার ব্যাপারে যথেষ্ঠ সতর্ক থাকতে হচ্ছে। নতুন যাই করি, সেটা হয় ‘অসুরান’ থেকে ভালো বা অনন্ত এর সমপর্যায়ের হবে। এখনো সেরকম কিছুর অপেক্ষায় আছি আমি।

হরর সিনেমায়তো অভিনয় করলেন, সামনে কি আপনাকে পুরোপুরি একশন চরিত্রে দেখার সুযোগ আছে?

(হেসে) এরকম কিছু চরিত্রের প্রস্তাব ইতোমধ্যে পেয়েছি আমি। পুরোপুরি না হলেও ‘দ্যা প্রিয়েস্ট’ এবং ‘চতুরমুখম’ সিনেমায় কিছু স্টান্ট ছিলো। সেগুলো অনেকটা ট্রায়ালের মত ছিলো। জীবনে নতুন কিছুই হচ্ছে। যেমন আমি কখনোই ভাবিনি আমি হরর সিনেমায় অভিনয় করব। দেখা যাক!

সাম্প্রতিক সময়ে থ্রিলার ব্যাপারে দর্শকদের অভিমতকে ভালো দিক হিসেবে করছেন?

হ্যাঁ, ‘ন্যায়াত্তু’ এবং ‘জোজি’ সিনেমাগুলোর দর্শক গ্রহণযোগ্যতা অবশ্যই উৎসাহ পাওয়ার মত। এছাড়া কিছু নির্মতাদের নতুন বিষয় নিয়ে পরীক্ষামূলক সিনেমা মালায়লাম সিনেমার জন্য ভালো দিক।

আপনি অনেকের জন্যই অনুপ্রেরণামূলক। সম্প্রতি আপনার ছবি ভাইরাল হয়েছে এবং আপনার ভক্তরা আপনাকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছে।

এটা পরিকল্পনা করেছি ব্যাপারটা এমন না। এটা কিভাবে ব্যাখ্যা করব আমার নেই। আমি করি উৎসাহ পাওয়ার মত কিছু না কিছু সবার মাঝেই আছে, কখনো আমি অন্যদের উৎসাহিত করে আবার অন্যদের কিছু আমাকে উৎসাহিত করে।

সম্প্রতি আপনি আপনার মার প্রথম অভিনয় এবং লিখা নিয়ে বলেছেন। সেই কি আপনার অনুপ্রেরনা?

প্রত্যেক মা যেমন তার সন্তানকে অনুপ্রানিত করে, তেমনি সেও আমাকে অনুপ্রানিত করেছে। আমি নিশ্চিত অবচেতনভাবেও সে আমাকে অনুপ্রানিত করেছে।

আপনার পরবর্তী মুক্তি প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘মারাক্কার’। এরপর কি আসছে?

সান্তোস সিভানের ‘জ্যাক এন্ড জিল’। এটা সাইন্স ফিকশন, থ্রিলার এবং প্রতিশোধের মিশ্রন। এই সিনেমার মাধ্যমে আমার হিন্দি সিনেমায় অভিষেক যাচ্ছে। বর্তমানে ভোপালে সিনেমাটির দৃশ্যধারনের কাজ চলছে।

আরো পড়ুনঃ
পার্থক্য তৈরী করার জন্য আমি এখানে এসেছি, অর্থ উপার্জনের জন্য নয়: বিজয় সেতুপতি

By নিউজ ডেস্ক

এ সম্পর্কিত

%d