পুলিশের চরিত্র নিয়ে আপত্তিঃ ছাড়পত্র জটিলতায় সৈকত নাসিরের ‘বর্ডার’

সৈকত নাসিরের ‘বর্ডার’

দেশীয় সিনেমার একদিকে যেমন কিছু নির্মাতা মানসম্পন্ন সিনেমা নির্মানের চেষ্টা করে যাচ্ছেন, অন্যদিকে আরো কিছু মানুষ সেটাকে প্রতিনিয়ত পিছনের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। মানহীন সিনেমার মাধ্যমে বছরের পর বছর ধরে দর্শকদের হল বিমুখ করছেন একদল তথাকথিত নির্মাতা এবং অভিনেতা। সিনেমার সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার এই যাত্রার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতার নাম হচ্ছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড। তৃতীয় শ্রেণীর সিনেমা মুক্তির অনুমতি দিতে সমস্যা না হলেও একের পর এক মানসম্পন্ন সিনেমাকে আটকে দিচ্ছে এই বোর্ড।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড এর আগে মোস্তফা সারোয়ার ফারুকি পরিচালিত ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমাটি দেশের ভাবমূর্তি নষ্টের অভিযোগে মুক্তির অনুমতি দেয়নি। এছাড়া অনন্য মামুন পরিচালিত ‘মেকআপ’ সিনেমাটিও মুক্তির অনুমতি দেয়নি সেন্সর বোর্ড। এই সিনেমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো সিনেমার মানুষদের খারাপ দেখানো হয়েছে এটিতে। জানা গেছে পুলিশকে নেতিবাচক ভাবে উপস্থাপনের কারনে মুক্তির জন্য ছাড়পত্র জটিলতায় পরেছে সৈকত নাসিরের ‘বর্ডার’ সিনেমাটি।

সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে ৯ সেপ্টেম্বর মুক্তির অপেক্ষায় থাকা সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের জীবনচক্র নিয়ে নির্মিত ‘বর্ডার’ সিনেমাটি আটকে যাচ্ছে সেন্সরে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সিনেমাটি দেখে ছাড়পত্র দেননি সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা। তাঁদের কাছে সিনেমাটি দেশের জন্য বিপজ্জনক মনে হয়েছে। সে জন্য এই সিনেমার ভাগ্য নির্ধারণ হবে সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান সিনেমাটি দেখার পর।

একটি সংবাদ মাধ্যমের সাথে আলাপকালে সিনেমাটি দেখেছেন সেন্সর বোর্ডের এমন এক সদস্য জানিয়েছেন, ‘সিনেমাটি ছাড়পত্র পেতে হলে দীর্ঘ সংশোধনী নিয়ে আসতে হবে। এই সিনেমায় পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে; দেখানো হয়েছে পুলিশ সীমান্ত এলাকার দায়িত্ব পালন করছেন। অন্য দেশের সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশে ঢুকে অবাধে অপরাধ করার সুযোগ দেওয়ার মতো গল্পও আছে।‘

সিনেমাটির যেসব দৃশ্য নিয়ে আপত্তি করেছেন সেন্সর বোর্ড সদস্যরা মুক্তি পেতে হলে সেগুলো সংশোধন করতে হবে। নতুন করে আবার দৃশ্যধারন করে দৃশ্যগুলো সংশোধন করা হলে হয়তো সিনেমাটি ছাড়পত্র পেতে পারে বলে মনে করেন সেন্সর বোর্ডের আরও এক সদস্য। তবে এ প্রসঙ্গে সিনেমাটির পরিচালক সৈকত নাসির আনুষ্ঠানিক ভাবে জানার পর মন্তব্য করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সেন্সরের এমন ঘটনা তিনি শুনেছেন। অফিশিয়ালি কাগজপত্র পেলেই তিনি মন্তব্য করতে পারবো।‘

এদিকে সৈকত নাসিরের ‘বর্ডার’ সিনেমার গল্প প্রসঙ্গে পরিবেশক প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া বলছে, দুই দেশের সীমানা বর্ডার। এই সীমানা দিয়ে বৈধভাবে পার হয় মানুষ, গরু ও নানান দ্রব্যাদি। তেমনই আবার হয় মাদকসহ নানান দ্রব্যাদির চোরাচালান। এই চোরাচালানকে ঘিরে গড়ে ওঠে বেশ কিছু গ্যাং। আবার তাদের মাঝে ঘটে নানা ঘাত, প্রতিঘাত, সংঘাত।

ম্যাক্সিমাম এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে বর্ডার সিনেমা মূলভাবনা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনাট্যকার সুদীপ্ত সাঈদের। এর আগে সিনেমাটি প্রসঙ্গে নির্মাতা সৈকত জানান, ‘সীমান্ত অঞ্চলে এমন কিছু ঘটনা যা দর্শকদের সামনে তুলে ধরলে লুফে নেবে। কাজটি নিয়ে কিছুদিন ধরে স্টাডি করে তাই মনে হয়েছে।‘ সিনেমার বেশিরভাগ দৃশ্যধারন হয়েছে দেশের বিভিন্ন বর্ডার অঞ্চলে। গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্তে দিয়ে শুরু হয়েছিলো সৈকত নাসিরের ‘বর্ডার’ সিনেমার কাজ।

সিনেমাটির অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঢাকাই সিনেমার নবাগত অভিনেতা সাঞ্জু জন। এর আগে সৈকত নাসিরের পরিচালনায় একটি মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছিলেন সাঞ্জু জন। এছাড়া এই সিনেমায় আরো অভিনয় করেছেন আশীষ খন্দকার, সুমন ফারুক, অধরা খান, রাশেদ মামুন অপু, মৌমিতা মৌ, শাহিন মৃধাসহ অনেকে। অনেক আগে ঘোষনার পরও মুলত মহামারীর কারনে এতদিন আটকে ছিলো সিনেমার কাজ।

আরো পড়ুনঃ
প্রকাশ্যে ফার্স্টলুক পোষ্টারঃ আগামী মাসে আসছে সৈকত নাসিরের ‘বর্ডার’
ধারাবাহিকভাবে পাঁচ সিনেমা মুক্তির মাধ্যমে বড় পর্দায় ফিরছেন ডিপজল
মারুফ-রত্নাকে নিয়েই শুরু হচ্ছে কাজী হায়াতের ‘ইতিহাস ২’

By নিউজ ডেস্ক

এ সম্পর্কিত

%d