রেহানা মরিয়ম নূর রিভিউ: একটি ব্যক্তিত্ববাদী সিনেমাটিক ভাষাকে আলিঙ্গন

রেহানা মরিয়ম নূর রিভিউ

চলচ্চিত্রের নামঃ রেহানা মরিয়ম নূর (২০২১)
মুক্তিঃ নভেম্বর ১২, ২০২১
অভিনয়েঃ আজমেরী হক বাঁধন, আফিয়া জাহিন জাইমা, কাজী সামি হাসান, আফিয়া তাবাসসুম বর্ণ, জোপারি লু, ইয়াছির আল হক এবং সাবেরি আলম প্রমুখ।
পরিচালনাঃ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ
প্রযোজনাঃ জেরেমি ‍চুয়া, রাজিব মহাজন, সাইদুল হক খন্দকার, এহসানুল হক বাবু, আলী আফজাল উজ্জ্বল এবং তুহিন তমিজুল
পরিবেশনাঃ ফিল্ম বুটিক
কাহিনীঃ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ
চিত্রনাট্যঃ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ
সম্পাদনাঃ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ
চিত্রগ্রহনঃ তুহিন তমিজুল

প্রারম্ভিক কথাঃ চলতি বছরে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলোর মধ্যে অন্যতম আলোচিত সিনেমা ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। ২০২১ সালে এ সিনেমাটি ৭৪তম কান চলচ্চিত্র উৎসব আসরের আঁ সেরতাঁ র‍্যগার বিভাগে নির্বাচিত হয়। এটি এ বিভাগে স্থান পাওয়া প্রথম বাংলাদেশী সিনেমা। কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনের পর সিনেমাটি সমালোচকদের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিলো। এছাড়া এশিয়া প্যাসিফিক স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডসের (অ্যাপসা) ১৪ তম আসরে সিনেমাটি যৌথভাবে গ্র্যান্ড জুরি পুরস্কার অর্জন করে এবং একই আসরে সিনেমাটির অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন, সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জয় করেন। মূল ধারার বানিজ্যিক সিনেমা না হলেও সিনেমাটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ ছিলো অনেক। সমালোচকদের কাছে প্রশংসিত নির্মাতা সাদের এই উপহার দর্শকদের জন্য কতটুকু আলোড়িত করতে পারলো আজকের রিভিউতে থাকছে তার বিস্তারিত।

কাহিনী সংক্ষেপঃ রেহানা মরিয়ম নূর (আজমেরী হক বাঁধন), একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক, একজন একা মা, বাবা-মা এবং এক বেকার ভাই নিয়ে গঠিত পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। নিজের পেশাদারী জীবন, মেয়ের স্কুল এবং পরিবারের খরচ – সব মিলিয়ে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে থাকে। এরমধ্যে একদিন বিকেলে ডঃ আরেফিন (কাজী সামি হাসান) এবং তার ছাত্রী আনিকা রেহমান অ্যানি (আফিয়া তাবাসসুম বোর্নো) এর মধ্যকার যৌন অসদাচরণের একটি ঘটনার মুখোমুখি হয়। অ্যানি বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানাতে নারাজ। তার এমবিবিএস পরীক্ষার এক মাস বাকি এবং সে কোনো বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চায় না। ঘটনাটি গোপন রাখার জন্য অ্যানি রেহানার কাছে অনুরোধ করেন।

কিন্তু রেহানা নিজের জায়গা থেকে কোন ভাবেই বিষয়টিকে মেনে নিতে পারে না। রেহানা মনে করে আরিফিনের এই ঘটনার জন্য অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। অ্যানি যেহেতু বিষয়টি নিয়ে কোন পদক্ষেপ নিতে চায় না তাই রেহেনা বিষয়টি কতৃপক্ষের কাছে উপস্থাপনের জন্য একটি বিকল্প পথা বেছে নেয়। কলেজের অধ্যক্ষ (সাবেরী আলম) রেহানাকে ধৈর্য ধরে শুনছেন। তিনি রেহানাকে নৈতিক সমর্থন দিলেও প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে পারে বলে বিষয়টি নিয়ে কোন পদক্ষেপ নিতে চান না। উল্টো এই ঘটনায় রেহানাকে তিনি সমর্থনের বিকল্প কিছু প্রস্তাব দেন। আর পরীক্ষা চলাকালীন অসদোপায় অবলম্বনের দায়ে বহিষ্কৃত একজন ছাত্রীর কারনে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় রেহানাকে।

চলমান এই সংকটের মধ্যে, রেহানার প্রাণবন্ত মেয়ে ইমু (আফিয়া জাহিন জাইমা) তার স্কুলের একটি পরিবেশার জন্য প্রস্তুতি নেয়। রেহানা তার মেয়েকে যতটা সময় দিতে পারেন তার যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। কিন্তু স্কুল মনে করে সে তার সন্তানের জন্য যথেষ্ট করছে না। স্কুলে ইমুর একটি ঘটনা রেহানাকে আরেকটা ঝামেলায় দিকে ঠেলে দেয়। উক্ত ঘটনায় তিনি তার স্বভাবগত অস্থিরতার সাথে প্রতিক্রিয়া দেখান যা তার এই লিঙ্গ সমতার জন্য অপ্রতিরোধ্য যুদ্ধে অন্য একটি দিক উন্মুক্ত করে দেয়। রেহানা কি পারবে তার এই লড়াইয়ে জিততে? যার সাথে ঘটনাটি ঘটেছে সেই অ্যানি যখন কোন প্রতিবাদের দিকে যাচ্ছে না, সেক্ষেত্রে রেহানা কি পারবে আরিফিনকে তার কৃতকর্মের জন্য শাস্তি দিতে? ইমুর স্কুলের ঘটনার সাথে কি রেহানার চলমান লড়াইয়ের আদর্শগত কোন যোগসূত্র রয়েছে? এই অমীমাংসিত প্রশ্নগুলোর উত্তরের জন্য আপনাকে দেখতে হবে সিনেমাটি।

গল্প এবং চিত্রনাট্যঃ সিনেমাটির গল্পের পর্যালোচনায় একটি বিষয় প্রথমে পরিষ্কার করে নিতে চাই। ‘রেহানা মরিয়ম নূর’কে আমার কাছে গল্প নির্ভর সিনেমা মনে হয়নি। বরং একটি চরিত্রকে কেন্দ্র করে চরিত্র ভিত্তিক গল্প এবং চিত্রনাট্যে সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে। আর এই চরিত্রটির বিভিন্ন দিক ফুটিয়ে তুলতে কয়েকটি পারিপার্শিক বিষয়কে পর্দায় নিয়ে এসেছেন লেখক এবং পরিচালক সাদ। আলাদা আলাদা কয়েকটি ঘটনাকে রেহানা চরিত্রের মাধ্যমে এক সুতায় বাঁধার চেষ্টা করেছেন সাদ। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি তিনি এখানে সফল ছিলেন। গল্পের কয়েকটি প্রেক্ষাপট বর্ণনায় রেহানার চরিত্রে দিকগুলো উঠে এসেছে। সিনেমাটিতে রেহানার সংকল্প একই সাথে প্রশংসনীয় এবং বিরক্তিকর। তার পরার্থপরতা যেমন প্রশংসনীয় তেমনি কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার একরোখা এবং আবেগের অতিমাত্রা আপনাকে বিরক্ত করবে।

লেখক-পরিচালক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমার গল্প বলার কৌশল এবং চিত্রনাট্যে অদ্ভুত এক সমন্বয় রয়েছে যা সার্থকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। সিনেমাটির প্রধান চরিত্রটি এমন একটি বিশ্বের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যা নিখুঁত থেকে অনেক দূরে। তার বলিষ্ঠ নৈতিকতা বারবার তার চারপাশের হতাশাজনক নৈতিক শিথিলতার সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সেই দ্বন্দ্ব, ক্ষতবিক্ষত এবং তীক্ষ্ণ নাটকের উপস্থাপনা বেশ ভালোভাবেই উঠে এসেছে চিত্রনাট্যে।

পরিচালনাঃ পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমার ক্ষেত্রে নির্মাতা সাদের এটিই প্রথম কাজ। সাদ সিনেমাটিকে একটি দৃঢ়ভাবে বোনা মনস্তাত্ত্বিক জীবনবর্ণনা হিসেবে পর্দায় উপস্থাপন করেছেন। সম্ভবত রেহানার চরিত্রের সাথে নির্মাতা সাদকে এখানে মেলানো যায়। রেহানা যেমন নিজের মত এবং বিশ্বাসের প্রতি আস্থাশীল ছিলেন এবং কারো মতামতকেই তার উপর প্রভাব ফেলতে দেননি, তেমনি সাদও পুরো সিনেমাতে নিজের মত করে তার বক্তব্যকে উপস্থাপন করেছেন। সিনেমাটিক যতেষ্ট উপাদান থাকলেও দর্শকদের কিছুটা জটিল সমীকরণের দিকে ঠেলে দিয়েছেন তিনি। আর তার জায়গাতে একজন পরিচালক হিসেবে তিনি শতভাগ সফল ছিলেন।

সিনেমাটির আরো একটি বিশেষত্ব আছে তা হলো কালার গ্রেডিং। সিনেমাটির পোষ্টার থেকে শুরু করে স্ক্রিনের কালারে নীলাভ একটি অবয়ব রেখেছেন সাদ। এই নীলাভ অবয়বটি আসলে রেহানার চরিত্রকেই প্রতিনিধিত্ব করে। নীল বিষাদের রং আর রেহেনার চরিত্রটি তারই প্রতিফলন। পুরো সিনেমায় সম্ভবত রেহানাকে একবারই হাসতে দেখা গেছে। ইমুর সাথে রেহানার সেই দৃশ্যটি জীবন যুদ্ধে লড়াই করতে থাকা এক লড়াকু নারীর অন্য রূপকে দর্শকদের সামনে নিয়ে এসেছে। এছাড়া চরিত্র নির্ভর সিনেমা হলেও রেহানার পিছনের গল্পটা সাদ খুব সচেতনভাবে এড়িয়ে গেছেন। এড়িয়ে গেছেন বলেই রেহানা চরিত্রের পিছনের গল্পটা আপনাকে ভাবাবে। গল্পের ধারাবাহিকতায় বেশ কয়েকটি শূন্যস্থান রয়েছে সেগুলো পূরণের জন্য আপনি সিনেমাটি নিয়ে ভাববেন। আপনার অজান্তে আপনার মননে এবং চিন্তায় রেহানা ঘুরে ফিরে আসবে। আর রেহানার টেনিস খেলার মত পরিচালকের ছোট ছোট কিছু ইঙ্গিত সেই শূন্যস্থান পূরণে আপনাকে আপনার মত করে ভাবতে সাহায্য করবে। আর এটাই সম্ভবত পরিচালক হিসেবে সাদের সবচেয়ে বড় সফলতা।

অভিনয়ঃ আমি আগেই বলেছি যে, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ একটি চরিত্র নির্ভর সিনেমা। সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে বাঁধন ছিলেন অসাধারণ। পুরো সিনেমাটিতে তার অভিনয় ছিলো চোখে পরার মত। প্রতিটি দৃশ্যে বাঁধন নিজেকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যে, আপনার মনে হবে এইতো সেই রেহানা! নিঃসন্দেহে সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম সেরা অভিনয়ের সিনেমা এটি। বাঁধনের সাথে আরো একটি নাম বিশেষভাবে বলার দাবী রাখে সেটা হচ্ছে ইমু চরিত্রে আফিয়া জাহিন জাইমা। শিশুসুলভ দুষ্টামি, মায়ের কাছে আবদার এবং জেদ সব মিলিয়ে জাইমা সিনেমাটিকে দিয়েছে অন্য এক মাত্রা। যেখানে রেহানার প্রতি আপনার বিরক্তি লাগবে সেখানে ইমুর জন্য আপনি ব্যাথিত হবেন।

ডঃ আরিফিন চরিত্রে কাজী সামি হাসান সহজাত অভিনয় করেছেন। ভালোমন্দের সমন্বয়ে একটি জটিল ব্যক্তিত্বকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে সামি সফল ছিলেন। সিনেমাটির অন্য চরিত্রগুলোতে অন্য অভিনেতারা যার যার জায়গায় ভালো অভিনয় করেছেন। সংলাপ বলার ক্ষেত্রেও সবাই ছিলেন সহজাত। এ ক্ষেত্রেও নির্মাতা অবশ্যই প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।

চিত্রগ্রহন এবং সম্পাদনাঃ চিত্রগ্রাহক তুহিন তমিজুল এর আগে সাদের সাথে ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’তে কাজ করেছেন। এই দুইজনের মধ্যকার বোঝাপড়াটা আরো একবার দেখা গেলো ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমায়। সিনেমাটিতে ক্যামেরা সবসময় রেহানার কাছাকাছি থাকে কিন্তু খুব কমই তার মুখোমুখি হয়। ক্যামেরাটি তাকে একটি কোণ থেকে পর্যবেক্ষণ করে বা সে দ্রুত হাঁটার সময় তাকে অনুসরণ করে। এমনকি যখন ক্যামেরা রেহানার সামনে থাকে, দেখা গেছে প্রতিষ্ঠানের করিডোর এবং কক্ষে ঝুলে থাকা স্থিরতার বিপরীতে রেহানা নড়াচড়া করছেন। ক্যামেরা মুভমেন্ট এবং প্লেসমেন্ট দিয়ে এরকম তীক্ষ্ণতার সাথে একটি চরিত্রের অভ্যন্তরীণ অশান্তি তুলে আনতে পারাটা সচরাচর দেখা যায়না। রেহানাকে নিরলসভাবে ট্র্যাক করার মাধ্যেম নির্মাতা এমন একটি চরিত্রের সাথে দর্শকদের ধরে রাখতে চান যে নিজের সাথে, কলেজ প্রশাসনের সাথে এবং সমাজের সাথে যুদ্ধরত অবস্থায় আছে।

কাহিনী, চিত্রনাট্য এবং পরিচালনার পাশাপাশি সিনেমাটি সম্পাদনাও করেছেন সাদ নিজেই। সম্ভবত এক কারনেই গল্প এবং চিত্রনাট্যের মত সম্পাদনায়ও একটি সরল সমীকরণ নিয়ে এগিয়েছে সিনেমাটি। সম্পাদনার ক্ষেত্রেও নিজের চিন্তার প্রভাবটাকে প্রাধান্য দিয়েছেন সাদ। আর যে মুহুর্তে সিনেমাটি শেষ হয়েছে, সেই মুহুর্তে দর্শক হিসেবে আপনি কিছু একটার প্রত্যাশা নিয়ে পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকবেন! কিন্তু আপনাকে অবাক করে দিয়ে সেখানেই সিনেমাটির সমাপ্তি টানেন সাদ। যখন অনেকগুলো প্রশ্ন আপনার মাঝে ঝড় তুলছে তখন আপনি দেখছেন সমাপ্তি। আসলে সিনেমাটির সমাপ্তিতেই শুরু হয় আপনার নিজস্ব ভাবনার ব্যাকরণ, যেখানে পরিচালক, লেখক বা সম্পাদক কারোরই কোন নিয়ন্ত্রণ নেই।

উপসংহারঃ সর্বোপরি, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ একটি উদ্দীপনামূলক, ব্যক্তিত্ববাদী সিনেমাটিক ভাষাকে আলিঙ্গন। বানিজ্যিক সিনেমার চাকচিক্যকে এক পাশে রেখে একটি চিন্তাকে নিজের মত করে পর্দায় উপস্থাপনের দুঃসাহস দেখিয়েছেন নির্মাতারা। ব্যাক্তিগতভাবে আমার মনে হয় একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে সমাজ ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ না করে সবার সামনে কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন সাদ। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি সততার সাথে খোঁজ করা যায়, তাহলে সমাধানটা অনেকটুকুই নিশ্চিত হয়ে যায়। যা ঠিক নয় সেটাকে মেনে নেয়া বা সেটার সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয়া সমাধান নয়! আর এই প্রশ্নগুলো আপনি, আমি এবং আমাদের সবাইকে প্রভাবিত করে। সেই সাথে থাকছে তীক্ষ্ণ চিত্রনাট্য, অস্থিরমনা ক্যামেরা, নিঃশব্দ রঙবিন্যাস এবং আজমেরি হকের গভীর প্রভাব বিস্তারকারী অভিনয়ের সমন্বয় চলচ্চিত্রটিতে অস্থির আবেগপূর্ণ গতি সঞ্চার করে

আরো পড়ুনঃ
ট্যাংরা ব্লুজ রিভিউ
কসাই রিভিউ
নবাব এলএলবি রিভিউ

By হোসেন মৌলুদ তেজো

এ সম্পর্কিত