বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে আবারো নতুন জাগরণের উপলক্ষ্য হয়ে হাজির হলেন জেমস ক্যামেরন। আগেই বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে ‘স্পাইডার-ম্যানঃ নো ওয়ে হোম’ সিনেমাটির আয়কে ছাড়িয়ে গিয়েছিলো জেমস ক্যামেরন পরিচালিত ‘অ্যাভাটার’ ফ্র্যাঞ্চাইজির দ্বিতীয় পর্ব ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’। এর মাধ্যমে মহামারী পরবর্তি বক্স অফিসে সর্বোচ্চ আয়ের সিনেমা হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’। জানা গেছে এবার নতুন আরো একটি মাইলফলক অতিক্রম করেছে এই সিনেমাটি, যার মাধ্যমে বক্স অফিসে জেমস ক্যামেরনের অনন্য রেকর্ড নিশ্চিত হয়েছে।
হলিউডের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম ডেডলাইনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে সিনেমাটির আয় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ষষ্ট সিনেমা বিশ্বব্যাপী ২ বিলিয়নের বেশী আয় করা সিনেমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’ সিনেমাটি। আর এই ছয়টি সিনেমার মধ্যে তিনটি সিনেমাই পরিচালনা করেছেন জেমস ক্যামেরন। বক্স অফিসে জেমস ক্যামেরনের অনন্য রেকর্ডে রয়েছে ‘অ্যাভাটার’ ফ্র্যাঞ্চাইজির দুটি সিনেমা।
বক্স অফিসে বক্স অফিসে জেমস ক্যামেরনের এই অনন্য রেকর্ড, তাকে অন্যদের কাছ থেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গেছে। ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’ সিনেমাটির বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে ১.৪২৬ বিলিয়ন এসেছে আন্তর্জাতিক বক্স অফিস থেকে। বিশ্বব্যাপী ২ বিলিয়ন আয় করা সিনেমার তালিকায় এটি অবস্থান করছেন চতুর্থ অবস্থানে। তালিকার প্রথম তিনটি অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে ‘অ্যাভাটার’, ‘অ্যাভেঞ্জারস: এন্ডগেম’ এবং ‘টাইটানিক’।
আর ২ বিলিয়ন আয়ের মাধ্যমে সিনেমাটি পিছনে ফেলে দিয়েছে ‘অ্যাভেঞ্জারস: ইনফিনিটি ওয়ার’-এর মত সিনেমাকে। বক্স অফিসে জেমস ক্যামেরনের আধিপত্য আরো একভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। পৃথিবীর সর্বোচ্চ আয়ের চারটি সিনেমার মধ্যে তিনটি সিনেমাই নির্মান করেছেন জেমস ক্যামেরন। অন্য সিনেমাটি হচ্ছে মার্বেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সের সবচেয়ে বাণিজ্যিক সফল সিনেমা ‘অ্যাভেঞ্জারস: এন্ডগেম’। সিনেমাটিতে একঝাক হলিউড সুপারস্টারকে দেখা গিয়েছিলো।
আন্তর্জাতিক বক্স অফিসে চলতি সপ্তাহে সিনেমাটির আয় কিছুটা কমলেও, ইতিমধ্যে দারুণ অবস্থানে চলে গিয়েছে ‘অ্যাভাটার ২‘। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহ ঝড় তুলেছে এক মাসের বেশী সময় ধরে। আন্তর্জাতিক বাজারে আয়ের ক্ষেত্রে এই সিনেমাটি ১০০ মিলিয়নের বেশী আয় করছে তিনটি দেশে। সেগুলো হচ্ছে চীন (২২৯.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার), ফ্রান্স (১২৯.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) এবং জার্মানি (১১৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। এছাড়া কোরিয়া এবং যুক্তরাজ্যে সিনেমাটির আয়ের পরিমাণ ছিলো যথাক্রমে ৯৬.৯ এবং ৮১.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তবে বিদেশী ভাষার সিনেমা হিসেবে বেশ কয়েকটি দেশে এখনো ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’ দর্শকদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কুয়েত, সৌদি আরব, মেক্সিকো, পেরু, ইকুয়েডোর, বলিভিয়া, সেন্ট্রাল অ্যামেরিকা এবং ভিয়েতনাম। আর আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে সিনেমাটি সবচেয়ে বেশী আয় করেছে ইউরোপ থেকে। যেখানে সিনেমাটির মোট আয় ৬৬৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরপরই রয়েছে এশিয়া-প্যাসিফিক (৫৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) এবং ল্যাটিন অ্যামেরিকা (.১৬১মিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
উল্লেখ্য যে, সর্বকালের সর্বোচ্চ আয়ের সিনেমার তালিকার প্রথম স্থানে রয়েছে ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’ সিনেমার প্রথম পর্ব। নতুন করে মুক্তি সহ সিনেমাটির এখন পর্যন্ত মোট আয়ের পরিমাণ ২.৯২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে প্রথম পর্বের আয়কে স্পর্শ করা ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’ সিনেমার জন্য অনেকটাই অসম্ভব। তবে ৩৫০ থেকে ৪৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেটে নির্মিত সিনেমাটি ইতিমধ্যে বক্স অফিসে আয়ের প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে।
পুরষ্কার জয়ী ‘অ্যাভাটার’ ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিলো ২০০৯ সালে। প্রথম পর্বের পর এই ফ্র্যাঞ্চাইজির দ্বিতীয় পর্বের জন্য দর্শকদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৩ বছর। আর এই সময়ে সবকিছু বদলে গেছে ব্যাপকভাবে। যদিও আরো তিনটি সিক্যুয়েল জুড়ে বলার মতো একটি গল্প রয়েছে, যদি ফ্র্যাঞ্চাইজির নতুন সিনেমাটি দর্শকদের মাঝে আগ্রহের জন্ম না দেয় তবে সেখানে ছাঁটাই করা যেতে পারে। সে বিবেচনায় ‘অ্যাভাটার ৩’ হতে পারে ফ্র্যাঞ্চাইজির শেষ সিনেমা!
প্রসঙ্গত, পরিচালনার পাশাপাশি জোশ ফ্রিডম্যানের সাথে যৌথভাবে সিনেমাটির চিত্রনাট্য রচনা করেছেন জেমস ক্যামেরন। আর ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’ সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন জো সালডানা, স্যাম ওয়ার্থিংটন, সিগর্নি ওয়েভার, স্টিফেন ল্যাং, ক্লিফ কার্টিস, জোয়েল ডেভিড মুর, সিসিএইচ পাউন্ডার, এডি ফ্যালকো, জেমাইন ক্লেমেন্ট এবং কেট উইন্সলেট। ২০২২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেয়েছে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত এই সিনেমাটি।
আরো পড়ুনঃ
মহামারী পরবর্তি সর্বোচ্চ আয়ের সিনেমা ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’
বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে রেকর্ড আয়ের পথে ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’
মাত্র দুই সপ্তাহে বক্স অফিসে নতুন মাইলফলক অতিক্রম করলো ‘অ্যাভাটার ২’