গত ১৯শে মে মুক্তি পেয়েছে হলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ‘ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস’ সিরিজের দশম সংস্করণ ‘ফাস্ট টেন’। বিগত দুই দশক ধরে দুর্দান্ত সব অ্যাকশন এবং স্টান্টের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বিশাল এক ভক্ত সমাজ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে ‘ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস’। সেই সাথে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির অন্যতম প্রধান আকর্ষন হচ্ছে ডমের পারিবারিক মূল্যবোধ এবং এর সাথে জড়িত আবেগ। ফ্র্যাঞ্চাইজির নতুন পর্বেও এর ব্যাতিক্রম হয়নি। ‘ফাস্ট টেন’ বক্স অফিস প্রতিবেদন অনুসারে প্রথম সপ্তাহান্তে বিশ্বব্যাপী সিনেমাটি আয় করেছে ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশী।
হলিউডের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম ডেডলাইনে প্রকাশিত ‘ফাস্ট টেন’ বক্স অফিস প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, প্রথম সপ্তাহান্তে বিশ্বব্যাপী সিনেমাটি আয় করেছে ৩১৮.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে উত্তর আমেরিকা বক্স অফিস থেকে সিনেমাটি আয় করেছে ৬৭.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর উত্তর আমেরিকার বাইরের ৮৪ দেশ থেকে সিনেমাটি আয় করেছে আরো ২৫১.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মাধ্যমে চলতি বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়ের সিনেমা হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে ভিন ডিজেলের ‘ফাস্ট টেন’ সিনেমাটি।
চীনে মুক্তিপ্রাপ্ত সাম্প্রতিক সময়ের সীমিত কয়েকটি সিনেমা মধ্যে ‘ফাস্ট টেন’ অন্যতম। আর সেখানে দারুণ আয় করেছে এই সিনেমাটি। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ‘ফাস্ট টেন’ বক্স অফিস আয়ের মধ্যে চীন থেকে আয় হয়েছে ৭৮.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া ‘গার্ডিয়ানস অফ দ্য গ্যালাক্সি ভলিউম ৩’ সিনেমাকে পিছনে ফেলে ‘ফাস্ট টেন’ সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসের দখল নিয়েছে। মুক্তির তৃতীয় সপ্তাহে মার্বেল এবং ডিজনির ‘গার্ডিয়ানস অফ দ্য গ্যালাক্সি ভলিউম ৩’ সিনেমাটির আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮০.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সব মিলিয়ে তিন সপ্তাহে সিনেমাটির মোট আয় ৬৫৬.১ মিলিয়ন।
‘ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস’ ফ্র্যাঞ্চাইজির আগের সিনেমাগুলো মত ‘ফাস্ট টেন’ সিনেমাটিও উত্তর আমেরিকায় ভালো আয় করতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে দারুণ আয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে। চীন ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারের অন্যান্য এলাকা থেকে আয়ের মধ্যে রয়েছে মেক্সিকো (১৬.৭ মিলিয়ন), ফ্রান্স (৯.৭ মিলিয়ন), ব্রাজিল (৯.৬ মিলিয়ন), ভারত (৮.৬ মিলিয়ন), ইন্দোনেশিয়া (৮.৪ মিলিয়ন), জার্মানি (৮ মিলিয়ন), যুক্তরাজ্য (৭.৬ মিলিয়ন) এবং দক্ষিণ কোরিয়া (৬.৭ মিলিয়ন)। এছাড়া জাপান থেকে সিনেমাটি আয় করেছে ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা এই ফ্র্যাঞ্চাইজির সর্বোচ্চ আয়।
উত্তর আমেরিকায় প্রথম সপ্তাহান্তে ‘ফাস্ট টেন’ বক্স অফিস আয়ের পরিমাণ ছিলো ৬৭.৫, যা অনেকটা ফ্র্যাঞ্চাইজির আগের পর্বের চেয়ে একটু কম। উত্তর আমেরিকায় ২০২১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ফাস্ট ৯’ সিনেমাটি আয় করেছিলো ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর প্রথম সপ্তাহান্তে ১৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত উত্তর আমেরিকায় সর্বোচ্চ উদ্বোধনী সিনেমার তালিকায় প্রথম অবস্থানে রয়েছে ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ফিউরিয়াস ৭’। এরপর এই তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে ‘দ্য ফেইট অফ দ্য ফিউরিয়াস’ (৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) এবং ‘ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস ৬’ (৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
উল্লেখ্য যে, ‘ফাস্ট এক্স’ পরিচালনা করেছেন ‘ক্ল্যাশ অফ দ্য টাইটানস’ এবং ‘দ্য ইনক্রেডিবল হাল্ক’ খ্যাত নির্মাতা লুই লেটারিয়ার। সিনেমাটিতে আগের পর্বগুলোর মত থাকছেন মিশেল রদ্রিগেজ, টাইরেস গিবসন, ক্রিস “লুডাক্রিস” ব্রিজস, নাথালি এমমানুয়েল, জর্দানা ব্রুস্টার, সুং ক্যাং, জেসন স্ট্যাথাম, জন সিনা স্কট ইস্টউড, অস্কার বিজয়ী হেলেন মিরেন এবং চার্লিজ থেরন। আর এটি ফাস্ট এক্স প্রযোজনা করেছেন নিল এইচ. মরিটজ, ভিন ডিজেল, জাস্টিন লিন, জেফ কিরশেনবাউম এবং সামান্থা ভিনসেন্ট।
‘ফাস্ট টেন’ সহ ‘ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস’ ফ্র্যাঞ্চাইজির এখন পর্যন্ত দশটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। আগের পর্বগুলোতে সিরিজের অনেকগুলো চরিত্র বিভিন্ন ঘটনায় হারিয়ে গিয়েছিলো। দশম সংস্করণের মাধ্যমে সেই চরিত্রগুলোকে আবারো ফিরিয়ে আনছেন এর নির্মাতারা। ‘ফাস্ট এক্স’ ট্রেলারে ‘অ্যাভেঞ্জার্সঃ এন্ডগেম’-এর মত ‘ফাস্ট এবং ফিউরিয়াস’ ফ্র্যাঞ্চাইজির স্মৃতিগুলো ফিরিয়ে আনার ইঙ্গিত দিয়েছেন নির্মাতারা। আর সবকিছু ঠিক থাকলে ‘ফাস্ট এক্স’ ট্রিলজির মাধ্যমেই সমাপ্ত হতে যাচ্ছে ডমের পরিবারের এই যাত্রা। ইতিমধ্যে দশম সংস্করণের বাকী দুই সিনেমা নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ আকাশচুম্বী।
আরো পড়ুনঃ
তিন পর্বে নির্মিত হতে যাচ্ছে ‘ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস’ সিরিজের দশম সংস্করণ
‘অ্যাভেঞ্জার্সঃ এন্ডগেম’ স্মৃতি ফিরে আসছে ‘ফাস্ট এক্স’ সিনেমার গল্পে
‘ফাস্ট এক্স’ ট্রেলার: পরিবারকে বাঁচাতে পুরনো শত্রুর মুখোমুখি ভিন ডিজেল