‘মিশন ইম্পসিবলঃ ডেড রেকনিং – পার্ট ওয়ান’ দ্বিতীয় সপ্তাহান্তে বিশ্বব্যাপী বক্স অফিস আয়ে বড় পতনের মুখে পরেছে। নিঃসন্দেহে প্যারামাউন্টের এই সিনেমাটি দ্বিতীয় সপ্তাহান্তে ‘বার্বি’ এবং ‘ওপেনহাইমার’ মুক্তিতে বড় ধাক্কা খেয়েছে। ১৯৯৬ সালের দর্শক নন্দিত ‘মিশন: ইম্পসিবল’ টেলিভিশন শো-এর উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে এই সিনেমা। যেখানে সপ্তমবারের মত হলিউড তারকা টম ক্রুজ তার আইকনিক সুপারস্পাই ইথান হান্ট হিসেবে পর্দায় হাজির হয়েছেন। দুই পর্বের এই সিনেমাটির দ্বিতীয় পর্ব ‘ডেড রেকনিং পার্ট টু’ আগামী বছরের জুনে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ‘মিশন ইম্পসিবলঃ ডেড রেকনিং’ বক্স অফিস প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে অভ্যন্তরীণ বাজারে দ্বিতীয় সপ্তাহান্তে সিনেমাটি আয় করেছে মাত্র ১৯.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের প্রথম তিনদিনের আয়ের ‘বার্বি’ এবং ‘ওপেনহাইমার’-এর পর তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সিনেমাটি। আর মুক্তির প্রথম সপ্তাহান্তে ‘বার্বি’ এবং ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমাগুলো উত্তর আমেরিকার বক্স অফিসে আয় করেছে যথাক্রমে ১৫৫ এবং ৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই দুটি সিনেমাই মুক্তির প্রথম সপ্তাহান্তে প্রত্যাশার বেশী আয় করতে সক্ষম হয়েছে।
অন্যদিকে ‘বার্বি’ এবং ‘ওপেনহাইমার’ মুক্তি বিবেচনা করা দ্বিতীয় সপ্তাহান্তে ‘মিশন ইম্পসিবলঃ ডেড রেকনিং’ বক্স অফিস আয় অনুমান করা হয়েছিল ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু সিনেমাটি প্রত্যাশার চেয়ে ২ মিলিয়ন কম আয় করেছে। দ্বিতীয় সপ্তাহান্ত শেষে ‘মিশন ইম্পসিবলঃ ডেড রেকনিং’ সিনেমার অভ্যন্তরীণ বক্স অফিস থেকে আয় দাঁড়িয়েছে ১১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে তুলনামূলক ভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে কিছুটা ভালো অবস্থানে রয়েছে সিনেমাটি। দ্বিতীয় সপ্তাহান্ত শেষে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সিনেমাটি আয় করেছে ২৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সব মিলিয়ে দ্বিতীয় সপ্তাহান্ত শেষে বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে সিনেমাটি আয় করেছে ৩৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। মুক্তির প্রথম সপ্তাহান্তে ৫ দিনে সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী আয় করেছিলো ২৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বস্তুত প্রথম সপ্তাহান্তেই সিনেমাটি বক্স অফিসে হতাশা দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলো। বিশেষকরে টম ক্রুজ অভিনীত এর আগের সিনেমা ‘টপ গানঃ মেভেরিক’ বিশ্বব্যাপী ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের কারনে ‘মিশন ইম্পসিবলঃ ডেড রেকনিং’ সিনেমাটি নিয়ে সবার প্রত্যাশা ছিলো আকাশচুম্বী। প্রথম সপ্তাহান্তের তুলনায় দ্বিতীয় সপ্তাহান্তে সিনেমাটির আয়ে পতন হয়েছে ৬৫%, যা নির্মাতাদের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে আরো জানা গেছে, ‘মিশন ইম্পসিবলঃ ডেড রেকনিং’ সিনেমাটি মোট বাজেট ২৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বক্স অফিসে এই সিনেমার ভাগ্য নিয়ে এখনোই কোন মন্তব্য করা যাচ্ছে না। তবে ‘বার্বি’ এবং ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমাগুলো নিয়ে বিশ্বব্যাপী দর্শকদের উম্মাদনা এবং দ্বিতীয় সপ্তাহান্তে টম ক্রুজের সিনেমার বড় পতন মনে হচ্ছে খারাপ কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে। ‘মিশনঃ ইম্পসিবল’ ফ্র্যাঞ্চাইজির সিনেমাগুলোর মধ্যে অন্যতম ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছিলো ‘ডেড রিকনিং – পার্ট ওয়ান’। সামনের দিনগুলোতে সিনেমাটি কেমন আয়ের ধারা অব্যাহত রাখে এখন সেটাই দেখার বিষয়।
উল্লেখ্য যে, আগামী কিছুদিনের মধ্যে ‘ডেড রিকনিং – পার্ট ওয়ান’ বক্স অফিস আয়ে ‘মিশনঃ ইম্পসিবল থ্রী’ সিনেমা ছাড়িয়ে যাবে। তবে সেটি আসলে বলার মত কোন অর্জন না, কারণ এই ফ্র্যাঞ্চাইজির অন্য সিনেমাগুলোর আয় এর জন্য অনেকটাই অধরা মনে হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী এই ফ্র্যাঞ্চাইজির এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ আয়ের তিনি সিনেমা হচ্ছে ‘মিশন: ইম্পসিবল — ফলআউট’ (৭৮৬ মিলিয়ন ডলার), ‘মিশন: ইম্পসিবল — গোস্ট প্রোটোকল’ (৬৯৪ মিলিয়ন ডলার) এবং ‘মিশন: ইম্পসিবল —রগ নেশন’ (৬৮৮ মিলিয়ন ডলার)। এছাড়া সিনেমাটির প্রথম দুই পর্বের বিশ্বব্যাপী আয় ছিলো যথাক্রমে ৪৫০ এবং ৫৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রসঙ্গত, গোয়েন্দা অ্যাকশন গল্পের ‘মিশন ইম্পসিবল – ডেড রেকনিং’ সিনেমাটি পরিচালনার পাশাপাশি এর চিত্রনাট্যও রচনা করেছেন ক্রিস্টোফার ম্যাককুয়ারি। টম ক্রুজ অভিনীত ‘মিশন: ইম্পসিবল’ সিরিজের সপ্তম কিস্তি এবং ম্যাককুয়ারি পরিচালিত সিরিজের তৃতীয় কিস্তি এই সিনেমা। ‘রগ নেশন’ এবং ‘ফলআউট’র পর তৃতীয়বারের মতো সিরিজের সিনেমা পরিচালনায় ফিরছেন এই নির্মাতা। সিনেমাটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন টম ক্রুজ, ভিং রামেস, হেনরি চের্নি, সাইমন পেগ, রেবেকা ফার্গুসন, ভেনেসা কিরবি এবং ফ্রেডেরিক শ্মিড্ট।
আরো পড়ুনঃ
প্রথম সপ্তাহান্তে নতুন রেকর্ড দিয়ে বক্স অফিস যাত্রা শুরু করলো ‘বার্বি’
প্রথম সপ্তাহান্তে বিশ্বব্যাপী প্রত্যাশার চেয়ে ভালো আয় করেছে ‘ওপেনহেইমার’
প্রথম সপ্তাহান্তে বক্স অফিসে ভালো অবস্থানে ‘মিশন ইম্পসিবলঃ ডেড রেকনিং’