গত ১৬ই ডিসেম্বর মুক্তি পেতে যাচ্ছে চলতি বছরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’। প্রথম পর্বের ঐতিহাসিক সাফল্যের পর এই ফ্র্যাঞ্চাইজির দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে দর্শকদের প্রত্যাশা ছিলো আকাশচুম্বী। লন্ডনে ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’ সিনেমার ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারে দর্শক এবং সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে জেমস ক্যামেরন পরিচালিত এই সিনেমা। বক্স অফিস আয়েও দেখা গেলো এর প্রতিফলন। ‘অ্যাভাটার ২’ বক্স অফিস প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে প্রথম সপ্তাহান্তে বিশ্বব্যাপী ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে এই সিনেমা।
হলিউডের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যমে ‘অ্যাভাটার ২’ বক্স অফিস প্রতিবেদন থেকে এমনটাই জানা গেছে। উদ্বোধনী সপ্তাহে সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী ৪০০ মিলিয়নের বেশী আয় করেছে বলে জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যমগুলো। মহামারী পরবর্তি সময়ের হিসেবে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ আয়ের সিনেমা হিসেবে আবর্ভুত হয়েছে ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’। তালিকার প্রথম দুই অবস্থানে রয়েছে ‘ডক্টর স্ট্রেঞ্জ ইন দ্য মাল্টিভার্স অফ ম্যাডনেস’ এবং ‘স্পাইডার-ম্যান: নো ওয়ে হোম’ সিনেমাগুলো।
‘অ্যাভাটার’ সিরিজের প্রথম পর্বের কারনে দ্বিতীয় পর্বটি নিয়ে বক্স অফিস আয়ে প্রত্যাশা আরো বেশী ছিলো ট্রেড বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু উত্তর আমেরিকা বক্স অফিসে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম আয় দিয়ে যাত্রা শুরু করেছে ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’ সিনেমাটি। তবে মহামারী পরবর্তি বক্স অফিসের চিত্র বিবেচনায় উদ্বোধনী আয় ভালো হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এই সময়ে খুব অল্প সংখ্যক সিনেমা এই মাইলফলক অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে। সিনেমাটির জন্য ভালো বিষয় হচ্ছে, দর্শকদের প্রশংসা পাচ্ছে সিনেমাটি।
উত্তর আমেরিকায় সিনেমাটির উদ্বোধনী সপ্তাহের আয় ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে বলে প্রত্যাশা করেছিলেন ট্রেড বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু হলিউডের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম ভেড়াইটিতে প্রকাশিত ‘অ্যাভাটার ২’ বক্স অফিস প্রতিবেদন অনুযায়ী উত্তর আমেরিকায় সিনেমাটির প্রথম তিনদিনে আয় ছিলো মাত্র ১৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে একটি জায়গায় এগিয়ে রয়েছে বহুল আলোচিত এই সিনেমা। জেমস ক্যামেরন পরিচালিত প্রথম সিনেমা হিসেবে প্রথম সপ্তাহান্তে উত্তর আমেরিকায় ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়াল ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’।
এদিকে প্রথম সপ্তাহান্তে বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে সিনেমাটি ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। উত্তর আমেরিকায় ১৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বক্স অফিসে সিনেমাটি আয় করেছে আরো ৩০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সব মিলিয়ে প্রথম সপ্তাহান্তে বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে সিনেমাটি মোট আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। মুক্তির তিন দিনের মাথায়ই সিনেমাটি প্রায় অর্ধেক বিলিয়নের কাছাকাছি আয় করতে সক্ষম হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ‘অ্যাভাটার’ সিরিজের প্রথম পর্বটি মুক্তির প্রথম সপ্তাহান্তে বক্স অফিসে ২৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছিলো। এরপর বক্স অফিসে সর্বকালের সর্বোচ্চ আয়ের সিনেমা হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে ‘অ্যাভাটার’। মহামারী পরবর্তি সময়ে আয়ের হিসেবে এই তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রথম সপ্তাহান্ত। এর আগে ‘ডক্টর স্ট্রেঞ্জ ইন দ্য মাল্টিভার্স অফ ম্যাডনেস’ সিনেমাটি ৪৪২ মিলিয়ন এবং ‘স্পাইডার-ম্যান: নো ওয়ে হোম’ ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করতে সক্ষম হয়েছিলো।
পুরষ্কার জয়ী ‘অ্যাভাটার’ ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিলো ২০০৯ সালে। প্রথম পর্বের পর এই ফ্র্যাঞ্চাইজির দ্বিতীয় পর্বের জন্য দর্শকদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৩ বছর। আর এই সময়ে সবকিছু বদলে গেছে ব্যাপকভাবে। যদিও আরো তিনটি সিক্যুয়েল জুড়ে বলার মতো একটি গল্প রয়েছে, যদি ফ্র্যাঞ্চাইজির নতুন সিনেমাটি দর্শকদের মাঝে আগ্রহের জন্ম না দেয় তবে সেখানে ছাঁটাই করা যেতে পারে। সে বিবেচনায় ‘অ্যাভাটার ৩’ হতে পারে ফ্র্যাঞ্চাইজির শেষ সিনেমা!
প্রসঙ্গত, পরিচালনার পাশাপাশি জোশ ফ্রিডম্যানের সাথে যৌথভাবে সিনেমাটির চিত্রনাট্য রচনা করেছেন জেমস ক্যামেরন। আর ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’ সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন জো সালডানা, স্যাম ওয়ার্থিংটন, সিগর্নি ওয়েভার, স্টিফেন ল্যাং, ক্লিফ কার্টিস, জোয়েল ডেভিড মুর, সিসিএইচ পাউন্ডার, এডি ফ্যালকো, জেমাইন ক্লেমেন্ট এবং কেট উইন্সলেট। আগামী ১৬ই ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেতে যাচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত এই সিনেমাটি।
আরো পড়ুনঃ
বিশেষ প্রদর্শনীতে প্রশংসায় ভাসছে ‘অ্যাভাটারঃ দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’
বিশাল বাজেটের কারনে বাণিজ্যিক সাফল্যের চাপে ‘দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’
‘দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’ ব্যর্থ হলে ‘অ্যাভাটার ৩’ হতে পারে শেষ সিনেমা!